দেশজুড়ে

যশোরে বাঁওড়ের মাছ শিকারে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জালের সয়লাব

যশোরে বাঁওড়ের মাছ শিকারে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জালের সয়লাব

যশোরের চৌগাছার বল্লভপুর বাঁওড়ের দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জলজপ্রাণি নিধনে দেদারসে ব্যবহার হচ্ছে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল। মাছ শিকারে প্রতিদিন শত শত নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করছে দুর্বৃত্তরা। এতে হুমকির মুখে পড়েছে দেশীয় মাছ ও জলজপ্রাণি।

Advertisement

বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে বল্লভপুর বাঁওড়ে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ কয়েকটি চায়না দুয়ারি জাল উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন। যার আনুমানিক মূল্য ৬০ হাজার টাকা।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন চৌগাছার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহান ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাসলিমা জেবিন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাসলিমা জেবিন জানান, অভিযান চলাকালে বল্লভপুর বাঁওড়ের বিভিন্ন স্থানে পেতে রাখা বেশ কয়েকটি অবৈধ চায়না জাল জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬০ হাজার টাকা। এসময় স্থানীয়দের চায়না জালের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করা হয়।

Advertisement

তিনি আরও জানান, নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জালে ছোট-বড় সব ধরনের মাছ ধরা পড়ে। ফলে প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন কমে যায়। জলজ প্রাণীর স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়। সরকার চায়না দুয়ারি জালসহ ক্ষতিকর সব ধরনের মাছ ধরার সরঞ্জাম নিষিদ্ধ করেছে। কিছু অসাধু ব্যক্তি নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে আসছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জানা যায়, বল্লভপুর বাঁওড়ের ইজারাদার বল্লভপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে পর বাঁওড়ের মাছ লুট করে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে সমিতির সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি ও বাঁধা দিয়ে জোরপূর্বক দফায় দফায় মাছ লুট করে চক্রটি। দীর্ঘদিন ধরে সমিতির সদস্যরা বাঁওড়ে মাছ চাষের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে পায়নি। এই সুযোগে এলাকার দুর্বৃত্ত ও অসাধু মাছ শিকারিরা নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে দেশীয় মাছ নিধনে নেমেছে। সমিতির সদস্যরা তাদের নিষেধ করলেও শোনেনি। উল্টো নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে।

ইজারাদার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্যরা জানান, প্রশাসনকে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বুধবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে সামান্য পরিমাণ নিষিদ্ধ জাল জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তদের জেল-জরিমানা করা হয়নি। বিপুল পরিমাণ জাল বাঁওড়ে পাতা থাকলেও সব জব্দ করতে পারেনি প্রশাসন।

তারা আরও জানান, ৫ আগস্টের পর নৈরাজ্য সৃষ্টি করে বাঁওড়ের মাছ দফায় দফায় লুট করা হয়েছে। বাঁওড়ে পোনা মাছের অস্তিত্ব নেই। বর্তমানে দেশীয় প্রজাতির মাছ নিধনে নেমেছে দুর্বৃত্তরা। তারা অবৈধ জাল ব্যবহার করছে। তাদে নিষেধ করলে উল্টো হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। প্রশাসনের নীরবতায় প্রায় ১০ মাস ধরে দুর্বৃত্তরা পোনা ও দেশীয় প্রজাতির মাছ লুট করছে। এতে সমিতির সদস্যদের পথে বসার উপক্রম। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান ও তদারকি থাকলে অসাধু শিকারিদের তৎপরতা বন্ধ করা সম্ভব হবে।

Advertisement

মিলন রহমান/এমএন/এএসএম