জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে দিনাজপুর-৩ সদর আসনটি বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। যদিও আসনটি বেশির ভাগ সময় দখলে থেকেছে আওয়ামী লীগের। এই আসনটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় বোন প্রয়াত খুরশীদ জাহান হক (চকলেট) তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও তাদের পরিবারের কেউ নির্বাচন করবেন এমন গুঞ্জনও রয়েছে।
Advertisement
এই আসনে বিএনপি এখনো প্রার্থী নির্বাচন না করলেও জামায়াত তাদেরে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। জাতীয় পাটির প্রার্থীও সুনির্দিষ্ট হয়ে রয়েছে। তবে পতিত স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে চিহ্নিত জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
কারা মনোনয়ন চাইবেন? নাকি খালেদা জিয়ার পরিবার থেকে কেউ প্রার্থী হবেন? কে হতে পারেন চূড়ান্ত প্রার্থী? এই তিন প্রশ্নে ঘুরপাক খাচ্ছে জেলার নেতারা। তবে খুরশীদ হাজান হক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী থাকাকালীন ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন, যা এখনো মানুষের মুখে মুখে রয়েছে। তাই পরিবার থেকে কেউ প্রার্থী হলে জয় পাওয়া কঠিন হবে না। জাপার যে প্রার্থী রয়েছে তিনি জাতীয় পাটি নির্বাচনে যাবে কি না তার কোনো সবুজ সংকেত পাননি। একক প্রার্থী হওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে জামায়াত। তাছাড়া জামায়াতের প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন করায় তিনি রয়েছেন এগিয়ে।
আরও পড়ুন
Advertisement
দেশ স্বাধীনের পর থেকে বিভিন্ন সময় নতুন নতুন জেলা যেমন হয়েছে, তেমনি ১৯৮৬ সালে সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী এলাকা পূর্ণ গঠিত হয়েছে। সে হিসেবে দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনে ১৯৮৬ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন আমজাদ হোসেন (আওয়ামী লীগ), ১৯৮৮ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন মোখলেসুর রহমান (জাতীয় পার্টি), ১৯৯১ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন এম আব্দুর রহিম (আওয়ামী লীগ), ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ও ১৯৯৬ সালের জুন মাসের নির্বাচনে এবং ২০০১ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন খুরশীদ জাহান হক (বিএনপি), ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা চারবার সংসদ সদস্য ছিলেন ইকবালুর রহিম (আওয়ামী লীগ)।
এ আসনে তারেক রহমানও প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। কারণ এখানে আছে তার শৈশবের অনেক স্মৃতি। মায়ের জন্মস্থান ও নানির বাড়ি হওয়ার সুবাদে তারেক রহমানকেই দিনাজপুরবাসী প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়। তিনি প্রার্থী হলে বিএনপির কোনো নেতা মনোনয়ন চাইবেন না।
এ আসনে এবার নতুন ভোটার ১৪ হাজার ৪৫জন। কর্তন হয়েছে ৬ হাজার ৩১৭ জন ভোটার। এই আসনে মোট ৪ লাখ ২২ হাজার ৯৯৮ ভোটার আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে দিনাজপুর নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।
এবার দিনাজপুরে এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বড় বোন খুরশীদ জাহান হকের ছেলে খালেদা জিয়ার ভাগনে শাহরিয়ার আক্তার হক ডন, রংপুর বিভাগীয় সাবেক যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক (পদ স্থগিত) বখতিয়ার আহম্মেদ কচি, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোকাররম হোসেন, জেলা বিএনপির সদস্য শিল্পপতি হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
Advertisement
আরও পড়ুন
রমজানের আগে ভোট আয়োজনের প্রস্তাব তারেক রহমানের ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলো জামায়াতকারা মনোনয়ন চাইবেন? নাকি বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার থেকে কেউ প্রার্থী হবেন? কে হতে পারেন চূড়ান্ত প্রার্থী? এই তিন প্রশ্নে ঘুরপাক খাচ্ছে জেলার নেতারা। তবে খুরশীদ জাহান হক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী থাকাকালীন ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন, যা এখনো মানুষের মুখে মুখে। তাই পরিবার থেকে কেউ প্রার্থী হলে জয় পাওয়া কঠিন হবে না।
তবে এ আসনে তারেক রহমানও প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। কারণ এখানে আছে তার শৈশবের অনেক স্মৃতি। মায়ের জন্মস্থান ও নানির বাড়ি হওয়ার সুবাদে তারেক রহমানকেই দিনাজপুরবাসী প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়। তিনি প্রার্থী হলে আর বিএনপির কোনো নেতা মনোনয়ন চাইবেন না।
জামায়াতের প্রার্থী অ্যাডভোকেট ময়নুল আলম চূড়ান্ত হয়েছেন। তিনি এ আসনে উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। তার অমায়িক ব্যবহারের কথা মানুষের মুখে মুখে। এরইমধ্যে তিনি গ্রাম থেকে গ্রাম পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন। জানান দিচ্ছেন সংসদ নির্বাচনে তার প্রার্থী হওয়ার কথা।
জাতীয় পাটি নির্বাচন করলে এ আসনে বরাবরের মতো প্রার্থী হবেন জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আহম্মেদ শফি রুবেল। তিনি জানিয়েছেন, কেবল দলীয় সিদ্ধান্ত হলেই তিনি নির্বাচন করবেন।
এই আসনে অন্য দলগুলোকে নির্বাচনী কথাবার্তা বলতে শোনা না গেলেও কিছু ইসলামি দল তাদের প্রার্থী দেবে বলে জানা গেছে। নতুন গঠিত এনসিপিও তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। তবে তারা কৌশলগত কারণে প্রকাশ্যে আসছে না। আবার শহরে এটিও চাউর রয়েছে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন এমন একজন নেতা মনোনয়ন না পেলে এনসিপি থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলেও জানা গেছে।
এ আসনে অন্য দলগুলোকে নির্বাচনী কথাবার্তা বলতে শোনা না গেলেও কিছু ইসলামি দল তাদের প্রার্থী দেবে বলে জানা গেছে। নতুন গঠিত এনসিপিও তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বলে জানা গেছে। তবে তারা কৌশলগত কারণে প্রকাশ্যে আসছে না।
আরও পড়ুন
নির্বাচন এগিয়ে আনার বার্তা দেশের গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ: ফখরুল ঐকমত্যের ভিত্তিতে হবে সংস্কার ও জুলাই সনদ: আমীর খসরুআবার শহরে এটিও চাউর হয়েছে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন এমন একজন নেতা মনোনয়ন না পেলে এনসিপি থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলেও জানা গেছে।
তবে এই আসনে যে যে দল থেকেই নির্বাচন করুক না কেন, এখানে বিএনপির অবস্থা শক্ত ও পোক্ত। খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য কেউ নির্বাচন করলে তো কোনো কথাই নেই।
এএমএইচএম/এসএইচএস/এমএফএ/এমএস