দেশজুড়ে

শিশুকে হত্যার ১০ বছর পর দু’জনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন

শিশুকে হত্যার ১০ বছর পর দু’জনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন

চাঁদপুরের কচুয়ায় সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে মাদরাসা ছাত্র মো. মিলন হোসেনকে (১২) হত্যার দশ বছর পর দুজনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

Advertisement

মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) সৈয়দ তাফাজ্জল হোসেন হিরু এই রায় দেন।

হত্যার শিকার মিলন হোসেন কচুয়া কান্দিরপাড় গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. তাজুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় চাপাতলী মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শামিম হোসেন (২৮) কান্দিরপাড় প্রধানিয়া বাড়ির মো. ইমাম হোসেন ও সোহাগ হোসেন (২৮) পার্শ্ববর্তী পাড়াগাঁও গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি রাব্বি হোসেন (২৮) কান্দিরপাড় গ্রামের ফরাজি বাড়ির আবুল বাসারের ছেলে।

Advertisement

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, হত্যার শিকার মিলনের বাবা তাজুল ইসলামের সঙ্গে আসামিদের স্বজনদের সম্পত্তিগত বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের কারণে ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২৯ জুন দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে মাদরাসা ছাত্র মিলন বাড়ি থেকে পাশের রহিমানগর বাজারে যায়। বাজার থেকে বাড়িতে না ফেরায় পরদিন ৩০ জুন কচুয়া থানায় নিখোঁজ ডায়রি করেন তার ভাই মো. রিপন হোসেন (২৫)।

এরপর ২ জুলাই স্থানীয়দের মাধ্যমে মিলনের পরিবার জানতে পারে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে আসামি শামিম, সোহাগ ও রাব্বি মিলনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কান্দিরপাড়ের ইব্রাহিম খলিলের জমিতে নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।

বাদী রিপন হোসেন জানান, আসামিদের নাম পরিচয় জানার পর প্রথমে স্থানীয় লোকজন শামীমকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি দুই আসামি সোহাগ ও রাব্বির নাম পাওয়া যায়। এরপর তাদেরকে স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ২ জুলাই ঘটনাস্থল থেকে মিলনের মরদেহ উদ্ধার ও আসামিদের থানা হেফাজতে নেয়।

এ ঘটনায় ওই দিনই মিলনের বড় ভাই রিপন হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়াজেদ আলী ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

Advertisement

সরকার পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর মামলা চলাকালীন সময়ে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। আসামিদের অপরাধ স্বীকার ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক তাদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।

রায়ে আসামি শামিম হোসেন ও সোহাগ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড, ১ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। অপর আসামি রাব্বিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল হক কমল।

শরীফুল ইসলাম/এফএ/জিকেএস