ঈদযাত্রার শেষ মুহূর্তে গাজীপুরে দুই মহাসড়কে নেই যানজট। ঢাকা-টাঙ্গাইল এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এখন কার্যত ফাঁকা। শেষ মুহূর্তে যারা ঈদ উদযাপন করতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন তারা অনেকটাই স্বচ্ছন্দে যেতে পারছেন বলে জানা গেছে।
Advertisement
শুক্রবার (৬ জুন) বিকেল থেকে টঙ্গী-চন্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের কয়েকটি জায়গায় থেমে থেমে যানজট হলেও সন্ধ্যার দিকে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবার দুপুরের পর থেকে মহাসড়কে যাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকে। দুপুর এবং বিকেলে কয়েক পশলা বৃষ্টির কারণে যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি হলেও সন্ধ্যার দিকে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়।
রাত ৯টার দিকে গাজীপুর ভোগড়া বাইপাস পেয়ারা বাগান এলাকার বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায় স্বল্প সংখ্যক মানুষ সেখানে অবস্থান করছেন যারা সবাই উত্তরবঙ্গের যাত্রী। যাত্রীদের পাশাপাশি বেশকিছু বাসও অবস্থান করছে যাত্রী পরিবহনের জন্য।
কুড়িগ্রাম যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন নীলুফা বেগম ও তার স্বামী। তারা জাগো নিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সন্ধ্যায় তারা গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বাস টার্মিনালে এসে যানজটের কারণে ফের বাসায় চলে যান। আজ (শুক্রবার) দুপুরের পর খবর নিয়ে জানতে পারেন মহাসড়কে যানজট কমেছে। তাই সন্ধ্যার পর বাসা থেকে বের হয়েছেন গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য। তারা আশা করছেন যানজটমুক্ত পরিবেশে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
Advertisement
রংপুরগামী অন্য এক যাত্রী মুস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, স্ত্রী ও সন্তানকে এক সপ্তাহ আগেই গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। নিজের ব্যক্তিগত কিছু কাজ থাকায় আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যার দিকে বাস স্টপেজে এসেছি। টিকিট কেটেছি, রাতে রওনা দেবো। আশা করি ঈদের নামাজ বাড়িতে গিয়েই পড়তে পারব।
কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে শুক্রবার বিকেল থেকেই যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ অনেকটা কমেছে।
এদিন বিকেল ৫টার পর থেকে এসব মহাসড়কে যানবাহনের তেমন চাপ দেখা যায়নি। তবে পরিবহন সংকটের কারণে চন্দ্রা ত্রিমোড় ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় যাত্রীদের ভিড় আছে। তারা শেষ সময়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন।
এর আগে, আজ ভোর থেকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজট তৈরি হয়। এ ছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন এই দুই মহাসড়কের চলাচলকারী যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা যায়, আজ সন্ধ্যার পর থেকে গাজীপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অনেকটাই ফাঁকা। দুপুরের পর থেকে এ দুটি মহাসড়কে যানবাহন ও ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ কমতে শুরু করে। এখন যারা বাড়ি যাচ্ছেন, তারা তুলনামূলকভাবে স্বস্তিতে ফিরছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রায় দুপুরের আগে দুর্ভোগ থাকলেও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। নেই মানুষের কিংবা যানবাহনের চাপ। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও যানবাহন চলছে স্বাভাবিক গতিতে। তবে বাস সংকটের কারণে বিভিন্ন স্থানে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় পরিদর্শনে যান হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আ ক ম আকতারুজ্জামান বসুনিয়া। এ সময় তিনি বলেন, গত দুইদিনে উত্তরবঙ্গের সর্বাধিক মানুষ চন্দ্রা অতিক্রম করেছেন। অতীতের মতো এবারও চন্দ্রাকে হটস্পট হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। গত ঈদে আমরা সময় বেশি পেয়েছিলাম, তাই ওই সময় মানুষ একটু সময় নিয়ে বাড়ি গিয়েছিল।
গাজীপুরের নাওজোড় হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিন বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত চন্দ্রাসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক মানুষ ও যানবাহনের চাপ ছিল। আজ বিকেল ৫টার পর থেকে পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম বলেন, গত তিনদিন ধরে যানবাহন এবং যাত্রীদের যে চাপ ছিল আজ দুপুরের পর থেকে সেই চাপ কমতে থাকে। সন্ধ্যার পর দুই মহাসড়কেই যাত্রী এবং যানবাহনের সংখ্যা কমে গেছে।
এমএআই/এএমএ