রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে কর্মস্থল থেকে গণপরিবহনে বাড়ি ফিরছে মানুষ। এ সুযোগে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছেন বাসচালকরা। ফলে অনেকে পিকআপ ও ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছেন।
Advertisement
শুক্রবার (৬ জুন) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ (বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু) মোড়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
যাত্রীরা জানান, ঈদ উপলক্ষে সড়ক-মহাসড়কে প্রচুর যানবাহন রয়েছে। এসব যানবাহনের সব সিটই যাত্রীতে পূর্ণ। তাই বাধ্য হয়ে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকে। বসে কিংবা দাঁড়িয়ে, যেভাবেই যাওয়া হোক, কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন চালকরা।
ট্রাকে যাওয়া বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে বসে ছিলেন যুবক শামীম মিয়া। গাড়ির চাকা একটু থামলে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করি। ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলায় যাচ্ছি। সবগুলো গণপরিবহনের চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। তাই কম টাকায় ট্রাকে চড়ে বাড়ি যাচ্ছি।
Advertisement
পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ে বাসের অপেক্ষায় ছিলেন নাজমুল হক। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি শেরপুরের নকলা উপজেলায়। পাটগুদাম ব্রিজ থেকে অন্যান্য সময় সিটে বসে নকলা যেতে বাসভাড়া ছিল ১০০ টাকা। অথচ আজ সিটে বসে গেলে ৫০০ ও দাঁড়িয়ে গেলে ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। কয়েকটি বাসের হেলপারকে ন্যায্য ভাড়া নিতে বলেছি। কিন্তু তারা এই টাকার কম নেবেন না বলে জানিয়েছেন। তাই আরেকটি বাসের জন্য অপেক্ষায় আছি। চালকদের নির্ধারিত টাকার চেয়ে কিছু টাকা কম নিলেই বাসে উঠব।
একই মোড়ঘেঁষা সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্টেশনে দাঁড়িয়েছিলেন মুরাদ হাসান। তিনিও শেরপুরের নকলা যাবেন। মুরাদ জাগো নিউজকে বলেন, বছরের অন্যান্য সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ১৫০ টাকা দিয়ে নকলা গিয়েছি। কিন্তু এখন চালকরা নিচ্ছে ৩৫০ টাকা। আমাদের কিছুই করার নেই। এই টাকা দিয়েই যেতে হবে।
অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এম জি ট্রাভেলস নামে এক বাসের চালক কোনো উত্তর দেননি। তবে হেলপার জুয়েল মিয়া বলেন, ‘যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি। তাই ঠাসাঠাসি করে যাত্রী উঠাতে হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে সব চালকরাই ভাড়া বেশি নিচ্ছে। তাই আমরাও নিচ্ছি। এটা অন্যায় কিছু না। যাত্রীরা বাড়তি ভাড়া দিচ্ছে, আমাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন না। তবে সড়কে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর তৎপরতার জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হচ্ছে।’
একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আতিকুল ইসলাম আতিক বলেন, ‘আজকে নির্ধারণ করা ভাড়ায় কোনো চালক গাড়ি চালাচ্ছেন না। প্রত্যেক যাত্রী চালকদের সঙ্গে দামাদামি করে ভাড়ায় গন্তব্যে যাচ্ছেন। সব চালকই ভাড়া বেশি নিচ্ছে। তাই আমিও নিচ্ছি।’
Advertisement
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, ‘সড়কে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বপালন করছেন। গণপরিবহনের অনেক চালককে জরিমানা করা হয়েছে। তবুও সুযোগ বুঝে কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে কিনা জানা নেই।’
কামরুজ্জামান মিন্টু/এমএন/জেআইএম