খেলাধুলা

৯ গোলের থ্রিলার, ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালে স্পেন

৯ গোলের থ্রিলার, ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালে স্পেন

থ্রিলার বললেও একে কম বলা হবে। পুরো ম্যাচটাই ছিল যেন হাইলাইটস। টানটান উত্তেনার অসাধারণ এক ম্যাচ। যেখানে ৫৫ মিনিট পর্যন্ত ৪-০ গোলে এগিয়ে স্পেন। সেখানে প্রতিপক্ষ দলটিও কিন্তু হেভিওয়েট, ফ্রান্স।

Advertisement

৫৯তম মিনিটে জ্বলে উঠলেন কিলিয়ান এমবাপেরা। একে একে ৪টি গোল শোধ করে ফেললো দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। মাঝে আরও আকেটি গোল করে স্পেন।

তবে গোল পরিশোধের ধারাবাহিকতায় শেষ পর্যন্ত পঞ্চম গোলটি শোধ করার জন্য আর সময় পায়নি তারা। ৯ গোলের থ্রিলারের একটি ম্যাচ শেষ হলো ফ্রান্সের বিপক্ষে স্পেনের ৫-৪ গোলের জয়ে।

ফরাসিদের বিদায় করে উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে উঠে গেছে স্পেন। যেখানে তাদের জন্য আগে থেকেই অপেক্ষায় রয়েছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। যারা জার্মানিকে হারিয়ে উঠেছে ফাইনালে। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার নেশন্স লিগের ফাইনালে উঠলো স্প্যানিশরা।

Advertisement

পুরো ম্যাচের আলো কেড়ে নিয়েছেন একজন। তরুণ তারকা লামিনে ইয়ামাল। জোড়া গোল করেছেন তিনি। মূলত, তার এই জোড়া গোলেই নেশন্স লিগের ফাইনালের দেখা পেয়েছে স্প্যানিশরা। সে সঙ্গে ব্যালন ডি’অর লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করলেন তিনি।

গত সপ্তাহে মিউনিখে ইন্টারমিলানকে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা পিএসজি ফুটবলার উসমান ডেম্বেলে এবং ডেজিরে দুয়ে ব্যালন ডি’অরের অনেক বড় দুই দাবিদার। সেই তাদের দল ফ্রান্সের বিপক্ষে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে ব্যালন ডি’অরের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন লামিনে ইয়ামাল। মূলত এই ম্যাচটি শুধু নেশন্স লিগের ফাইনালে ওঠার লড়াই ছিল না। ছিল দুই তরুণ ফুটবলারের ব্যালন ডি’অর জয়ের লড়াইয়ের গল্পও।

জার্মানির স্টুর্টগার্টে এমএইচপি এরেনায় প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল স্পেন। দ্বিতীয়ার্ধে হলো মোট ৭ গোল। স্পেনের তিনটি এবং ফ্রান্সের চারটি। ২২তম মিনিটে গোলের সূচনা করেন নিকো উইলিয়ামস। ২৫তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে বসেন মাইকেল মেরিনো।

১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল খুব ঠাণ্ডা মাথায় পেনাল্টি কিক নিলেন ৫৪তম মিনিটে। স্পেন এগিয়ে যায় ৩-০ ব্যবধানে। এর মাত্র এক মিনিট পরই আবার গোল। ইয়ামালের বার্সা সতীর্থ পেদ্রি করেন দলের হয়ে চতুর্থ গোল।

Advertisement

৫৫ মিনিটে স্পেন ৪-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর গোলবন্যা শুরু করে ফ্রান্স। কিলিয়ান এমবাপে এর সূচনা করেন। ৫৯ মিনিটে পেনাল্টি পায় ফরাসীরা। স্পট কিক থেকে স্পেনের জালে বলটি জড়াতে কষ্ট করতে হয়নি কিলিয়ান এমবাপেকে।

কিন্তু ম্যাচের ৬৭তম মিনিটে ফ্রান্স আরও একবার পিছিয়ে পড়ে। লামিনে ইয়ামালের গোলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৫-১। অসাধারণ ব্যক্তিগত এক পারফরম্যান্সে এই গোলটি করেন ইয়ামাল।

এরপরই অসাধারণভাবে কামব্যাক করার চেষ্টা চালায় ফ্রান্স। ৭৯তম মিনিটে ফরাসীদের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন রায়ান চেরকি। ৮৪তম মিনিটে আত্মঘাতি গোল খেয়ে বসে স্পেন। নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে দেন দানি ভিভিয়ান। ইনজুরি সময়ে (৯০+৩ মিনিটে) আরও একটি গোল পরিশোধ করেন র‌্যান্ডাল কোলো মুয়ানি।

কিন্তু এরপর আর গোল শোধ করার সুযোগ পায়নি ফ্রান্স। ম্যাচ শেষে টেলেডিপোর্টেকে লামিনে ইয়ামাল বলেন, ‘আমি সব সময়ই আমার মাকে বলি যে, নিজের সর্বোচ্চ উজাড় করে দিয়ে খেলার চেষ্টা করবো। এ বিষয়টাই সব সময় আমাকে অনুপ্রাণিত করে থাকে এবং এ স্বপ্ন নিয়েই প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফ্রান্স দলটিতে রয়েছে বিশ্বমানের খেলোয়াড়। ৬০ মিনিটের পরের স্কোরলাইন অনেক বড় ছিল; কিন্তু তাদের এমন খেলোয়াড় আছে যারা আপনাকে কষ্ট দেয়। আমরা (স্পেন এবং পর্তুগাল) দুটি খুব ভালো দল, যাদের বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে। সেরা দলই জিতবে। আমি আশা করি স্পেনে কাপ নিয়ে আসব।’

আইএইচএস/এএসএম