বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল নামা অব্যাহত থাকায় সিলেটে বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরের চারপাশে পানি। ভারতের মেঘালয় রাজ্যে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় জাফলংয়ের অবস্থাও অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় পর্যটক সমাগম নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ধস নামতে পারে পর্যটন ব্যবসায়।
Advertisement
তবে শঙ্কা থাকলেও পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত সিলেট। পর্যটনকেন্দ্র, হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
‘প্রকৃতি কন্যা’ সিলেট দেশের পর্যটন নগরীগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছর বিভিন্ন উৎসবে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমান সিলেটে। প্রতিবারের ন্যায় এবারও ঈদের ছুটিতে পর্যটক সমাগমের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কিন্তু কয়েক দিনের টানা বর্ষণ, উজানের ঢল ও সিলেটের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় পর্যটক সমাগমের আশায় অনেকটা ভাটা পড়েছে।
Advertisement
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথর তলিয়ে যায়। এ অবস্থায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। তবে পানি কিছুটা কমে আসায় বৃহস্পতিবার (৫ জুন) পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।
এরআগে গত ৩০ মে এক বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা প্রশাসন জানায়, সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হলো। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় পর্যটনকেন্দ্রটি খুলে দেওয়া হবে।
সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ের অবস্থাও খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ভারতে বৃষ্টিপাতের কারণে উজানের ঢল নেমে যে কোনো সময় তলিয়ে যায়। পরে আবার ঢল নেমে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ অবস্থায় পর্যটকদের জন্য নিরাপদ নয় জাফলংও। এ পরিস্থিতিতে এবার পর্যটক-খরা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদি এ অবস্থা তৈরি হয় তাহলে পর্যটন ব্যবসায় ধস নামবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, জাফলংয়ে উঁচু থেকে পানি নেমে নিচের দিকে ধাবিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি তেমন স্থায়ী হয় না। ফলে এখনো পর্যটকরা ঘুরতে পারছেন। তবে বৃষ্টিপাত হলে স্বাভাবিকভাবে পর্যটকরা কম আসেন। বর্তমান অবস্থায় পর্যটনকেন্দ্রটি বন্ধ ঘোষণা করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
Advertisement
এদিকে, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারের ঈদেও পর্যটকদের সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকবে বলে ধারণা হোটেল ব্যবসায়ীদের।
সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি খন্দকার শিপার আহমদ বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের জন্য সিলেটের হোটেল-মোটেল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে আশা করি এবারের ঈদেও পর্যটকরা ঘুরতে আসবেন।'
সিলেট ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মতিউর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার সুবিধার্থে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও পর্যটনকেন্দ্রগুলো জনসমাগমে রূপ নেবে।
আহমেদ জামিল/এসআর/জেআইএম