ভালো অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলো চাইলেই সুদের হার কমাতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
Advertisement
তিনি বলেছেন, বিদ্যমান পরিস্থতিতেও ভালো অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলো চাইলেই সুদের হার কিছুটা হলেও কমাতে পারে। এতে ঋণগ্রহীতারা বিশেষত এসএমই উদ্যোক্তারা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে ‘বর্তমান ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ: ঋণগ্রহীতাদের দৃষ্টিকোণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সেমিনারে সংগঠনটির সভাপতি তাসকিন আহমেদ সভাপতিত্ব করেন।
ড. আনিসুজ্জামান বলেন, আর্থিক খাতের ঋণদাতা ও ঋণগ্রহীতা উভয়কেই দায়িত্বশীল হতে হবে। আমাদের অবশ্যই আনুষ্ঠানিক খাতকে রক্ষা করতে হবে, তা না হলে অনানুষ্ঠানিক খাতের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
Advertisement
তিনি সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার স্বার্থে আর্থিক ও মুদ্রানীতির মধ্যে সমন্বয়ের ওপর জোর দেন। একই সঙ্গে আর্থিক খাত সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট নীতির সমন্বয় ও নীতির অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করেন।
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (মুদ্রানীতি বিভাগ) ড. এজাজুল ইসলাম বলেন, আর্থিক খাতের বিদ্যমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেশকিছু নীতিমালা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা স্থিতিশীলতা আনতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতেও বেশকিছু ব্যাংক বেশ ভালোভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে। যদিও তাদের ঋণের সুদের হার অনেক বেশি এবং ব্যাংকগুলো চাইলে তা কমাতে পারে। এতে উদ্যোক্তারা আরও স্বস্থিতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন।
তিনি জানান, গত বছরের আগস্টের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ হতে প্রথম ধাপে ২৩ হাজার কোটি টাকা এবং পরবর্তীতে ১৯ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে বেসরকরি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়বে।
Advertisement
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, মুদ্রা বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা এলে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে, সেই সুদহার বাজারভিত্তিক করতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভারস্টোন ক্যাপিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও ঢাকা চেম্বারের সদ্য সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনীতিকে বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। যার মধ্যে টাকার অবমূল্যায়ন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, সরবরাহ ঘাটতি, আমদানি নিষেধাজ্ঞা, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ সুদহার, বেসরকারি খাতে অপ্রতুল ঋণপ্রবাহ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। শুধু অদক্ষতার কারণেই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অতিরিক্ত দামে জ্বালানি কিনতে হচ্ছে এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের এর জন্য উচ্চমূল্য দিতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহের অভাবে শিল্পের উৎপাদন ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে পণ্য উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব ছিল।
ইএআর/এমকেআর