ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বেড়েছে। তবে, মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো যানজট সৃষ্টি হতে দেখা যায়নি। ফলে মানুষের যাত্রা স্বস্তির হচ্ছে।
Advertisement
বুধবার (৪ জুন) বিকেলে মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল মোড় ও কাঁচপুরের বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের ভিড় চোখ পড়েছে।
জানা গেছে, স্বাভাবিক দিনগুলোতো মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশ দিয়ে অন্তত ২০ হাজার যানবাহন পারাপার করলেও ঈদকে ঘিরে এর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। যাত্রীর চাপ বাড়ায় যানবাহনেরও চাপ বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাউন্টারগুলোতে ঘরমুখো যাত্রীরা উপচেপড়া ভিড় করছেন। যাত্রী সেবায় নিয়োজিত দূরপাল্লার বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেও অল্প কিছুক্ষণ পরপর গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের ভাষ্য, ঈদে লম্বা ছুটি পাওয়ায় পরিবার-পরিজনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে এ ছুটে চলা তাদের।
Advertisement
এদিকে ফাঁকা সড়কে আরামদায়ক যাত্রার সুফল মিললেও টিকিটের মূল্য স্বাভাবিক দিনের চেয়েও ৫০-১০০ টাকা অতিরিক্ত রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। তবে কাউন্টার কর্তৃপক্ষগুলো বাড়িতে ভাড়ায় আদায়ের কথা অস্বীকার করেছেন।
আদমজী ইপিজেডের অন্তত এপারেলস্ নামক গার্মেন্টসে চাকরি করেন নূর নাহার। নিজ গ্রাম নোয়াখালীতে যাবার উদ্দেশ্যে কয়েকটি টিকিট কাউন্টারে ঘুরছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ফ্যাক্টরি দুপুর পর্যন্ত চলে ১০ দিন ছুটি দিয়েছে। তাই আজ দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গ্রামে যাচ্ছি। রাস্তা ফাঁকা রয়েছে বলে জেনেছি। ধারণা করি অল্প সময়ে চলে যেতে পারবো। তবে আমরা নিয়মিত ৫০০-৫৫০ টাকায় টিকিট কিনলেও আজ ৬৫০ টাকা দাবি করছে।
চিটাগাংরোড থেকে তিশা পরিবহনে ভৈরবে যাবেন গার্মেন্টস কর্মী মো. জসিম। তার অভিযোগ আগে ভৈরবের ভাড়া আড়াইশো টাকা থাকলেও এখন তিনশো করে নেওয়া হচ্ছে। নিরুপায় হয়ে তিনি ৫০ টাকা বাড়তি দিয়েছি।
Advertisement
শিমরাইল মোড়স্থ বাসস্ট্যান্ডের সেন্টমার্টিন দায়িত্বে থাকা মেহেদী হাসান বলেন, আমাদের এখানে কোনো বাড়তি ভাড়া আদায়ের সুযোগ নেই। নির্ধারিত ভাড়া দিতে চায়না যাত্রীরা। আমরা আগের ভাড়াতে টিকিট বিক্রি করছি।
বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগের সত্যতা জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি তিশা পরিবহনের কাউন্টার কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও যানজট নেই। ঘরমুখো মানুষের এবারের যাত্রা আরামদায়ক হবে। আমাদের এরিয়ায় সব মিলিয়ে ২৭ জন পুলিশ সদস্য মহাসড়ক আছে। এর পাশাপাশি সেচ্ছাসেবীরা রয়েছেন। ফলে যাত্রী এবং বাস চালকরা নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারছে। আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোরশেদ বলেছেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ফাঁকা রয়েছে। তবে ঢাকা-সিলেট সড়কে গাড়ি ধীরগতিতে যাতায়াত করছে। আমাদের অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত টহল বাড়িয়েছি। আমাদের টিম সর্বক্ষণ মহাসড়ক টহল দিচ্ছে। মানুষের জানমাল রক্ষায় আমরা সতর্ক রয়েছি।’
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনুর আলম জানান, আমাদের দুটি টহল টিম মহাসড়কে রাউন্ড দিচ্ছেন। মানুষের জানমাল নিরাপত্তায় আমরা সচেতন রয়েছি।
মো. আকাশ/আরএইচ/এমএস