আসন্ন কোরবানি কেন্দ্র করে শেরপুরে আলোচনায় এসেছে একটি ষাঁড়। চাল-চলনে বনের রাজা সিংহের মতো বলে মালিক আদর করে এর নাম দিয়েছেন ‘লায়ন’। ৩৫ মণ ওজনের লায়নের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট গাবতলীতে তোলা হবে ষাঁড়টি।
Advertisement
শেরপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোছা. নুরজাহান বেগম ঝর্ণার মেয়ে মৌসুমী হোসাইন মিতু প্রায় চার বছর ধরে লালন-পালন করেন শাহিওয়াল জাতের এই ষাঁড়টি। এটি লালন-পালনে মিতুকে সহায়তা করেন তার মা, কলেজপড়ুয়া ছেলে মাহবুবুর আবিদ রাফি ও ভাই মো. নাজমুল হোসেন মিলন।
কথা বলে জানা গেছে, ‘লায়ন’র জন্ম মিতুর বাড়িতেই। দেশি জাতের সঙ্গে শাহিওয়াল-ফ্রিজিয়ান ক্রসে লায়নের জন্ম হয়। লালচে রঙের ষাঁড়টির উচ্চতা ৬৬ ইঞ্চি। ওজন প্রায় ৩৫ মণ। এটির দাঁত ছয়টি। ধারণা করা হচ্ছে, উপজেলার সবচেয়ে বড় গরু এটি।
বিশালাকৃতির হলেও গরুটি অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির। মালিকের কথার বাইরে যায় না। খড়, ভুসি, খুদের ভাত, কলা, কাঁঠাল, শাক-সবজি, ঘাস, চালের কুঁড়া, খৈলসহ নানান প্রাকৃতিক খাবারে তাকে মোটাতাজা করা হয়েছে।
Advertisement
ষাঁড়টির মালিক মৌসুমী হোসাইন মিতু বলেন, “চার বছর ধরে গরুটি লালন-পালন করছি। এটি খুবই শান্ত স্বভাবের। বনের রাজা যেমন ‘লায়ন’, তেমনি আমাদের বাড়ির রাজা এই গরুটি। তাই আমার মা আদর করে নাম রেখেছেন ‘লায়ন’।”
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করেছি লায়নকে। প্রতিদিন তার পেছন কমপক্ষে ৮০০ টাকা খরচ হয়। এবার ঈদে হাটে তুলে ১৫ লাখ টাকা দাম চাচ্ছি।
মিতুর ছেলে রাফি বলেন, ‘লায়নকে’ আমি নিজের ভাইয়ের মতো করে বড় করেছি। বাড়ি থেকে তাকে আজ ঢাকায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছি। এজন্য আমাদের সবার অনেক কষ্ট হচ্ছে।
রাফির নানি বলেন, ছোট বাছুরটিকে আজ এ পর্যায়ে এনে বিক্রি করে দিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আমরা ‘লায়নকে’ আমাদের পরিবারের সদস্য ভাবতাম। ষাঁড়টির ন্যায্য দাম পাবো বলে আশা রাখি।
Advertisement
কথা হয় রাফির মামা মিলনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আদর না পেলে খাবারের দিকে তাকিয়েও দেখে না গরুটি। আমাকে দেখলেই সে হাম্বা ডাক দিয়ে ওঠে। দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৫ লাখ টাকা দাম চাচ্ছি, তবে আলোচনা সাপেক্ষে দাম কমানো যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল মিয়া বলেন, ‘লায়ন’ নামের গরুটিকে মিলনদের বাড়ির সবাই খুব যত্ন করে বড় করেছেন। প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা গরুটি সম্ভবত শেরপুরের সবচেয়ে বড় গরু। কোরবানির হাটে এটি সাড়া ফেলবে বলেই বিশ্বাস করি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ কান্তি দত্ত বলেন, গরুটিকে প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে কড় করা হয়েছে। গরুটির মালিক নিয়মিত আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছেন। কোরবানির জন্য এটি পুরোপুরি উপযুক্ত।
উমর ফারুক সেলিম/এসআর/এমএস