বিয়ের অনুষ্ঠানে নাচের দল ভাড়া করা হয়েছিল। কিন্তু প্রাপ্য টাকা নিয়ে ঝামেলা বাধার পর বিয়ের মণ্ডপ থেকে বরকেই তুলে নিয়ে গেলো তারা। এমনই বিচিত্র ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যের গোপালগঞ্জ জেলার দিঘওয়া দুবৌলি গ্রামে।
Advertisement
জানা গেছে, শুক্রবার (২৩ মে) রাত ১২টার পর বর সোনু কুমার শর্মা তার বিবাহ-পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করছিলেন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য উৎসবের একটি অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়েছিল লৌণ্ডা (পুরুষ) নাচের।
নাচ চলাকালীনই শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। অনুষ্ঠান শেষ করতে চায় নৃত্যদল, কিন্তু বরযাত্রীদের একাংশ দাবি করে পারফরম্যান্স চলতেই হবে। এই নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে ধীরে ধীরে রূপ নেয় হাতাহাতিতে।
একপর্যায়ে মুসকান কিন্নর নামের এক নৃত্যশিল্পী আহত হন ও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু মূল নাটক শুরু হয় এরপর।
Advertisement
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত আনুমানিক ২টার দিকে মুসকান কিন্নরের নেতৃত্বে একটি গোষ্ঠী একটি গাড়িতে করে এসে সরাসরি বরের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা কনেপক্ষের সদস্যদের মারধর করে ও মণ্ডপ থেকে বর সোনু কুমার শর্মাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
ঘটনার খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ টাউন থানার পুলিশ তৎপর হয়। প্রায় নয় ঘণ্টা পর, শনিবার (২৪ মে) সকাল ১১টার দিকে বরকে উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি উদ্ধার হন সিওয়ান জেলা থেকে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার অবধেশ দীক্ষিত জানান, ঘটনার পর পরই আমরা তদন্ত শুরু করি। আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিয়ের আয়োজক ও নৃত্যদলের মধ্যে বিরোধ ছিল বলে জানতে পেরেছি। সেই বিরোধ থেকেই এই চরম ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে চরম চাঞ্চল্য। বর ও কনে- উভয় পক্ষই ভীত ও হতবাক। বরপক্ষের এক আত্মীয় বলেন, এটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় দিন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা পরিণত হল এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নে।
Advertisement
বিয়েবাড়ির স্বজনদের দাবি, এটি পূর্বপরিকল্পিত। তারা অভিযোগ করেন, মুসকান কিন্নর আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলেন প্রতিশোধ নিতে, কারণ নাচ থামানো নিয়ে বিবাদে তিনি আহত হয়েছিলেন। তাই তার দলের সদস্যরা ফিরে এসে সোজা বরকে অপহরণ করে।
পুলিশ অবশ্য এখনও বিষয়টি তদন্ত করছে। ইতোমধ্যে মুসকান কিন্নর ও তার দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে অপহরণ, হামলা ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।
লৌণ্ডা নাচ, উত্তর ভারতের গ্রামীণ সমাজে বিবাহ অনুষ্ঠানের একটি ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় বিনোদন। কিন্তু এই ঘটনার পর ঐতিহ্যটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই এর নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মকানুন নিয়ে নতুনভাবে ভাবার দাবি তুলেছেন।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
এসএএইচ