শিক্ষা

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি অব্যাহত, বহু শিক্ষককে শোকজ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি অব্যাহত, বহু শিক্ষককে শোকজ

চাকরির শুরুতে ১১তম গ্রেডে বেতন দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

Advertisement

এদিকে, এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসলেও ক্লাস হচ্ছে না। ফলে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ শিক্ষার্থীর শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে।

কর্মবিরতি পালন করায় বহু সহকারী শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারপরও তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘পূর্ণদিবস কর্মবিরতির দুইদিন অতিবাহিত হলেও সরকারের উচ্চমহল বা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানে কোনা উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। উল্টো আমাদেরকে দাবি আদায়ের যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘কোথাও কোথাও প্রাথমিকের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা অফিসারদের হুমকি-ধামকির কারণে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন বাধার মুখে পড়েছেন। তারপরও দেশের ৮০-৯০ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।’

কর্মবিরতি করায় বহু শিক্ষককে শোকজ

তিন দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতি করায় দেশের বিভিন্ন জেলার প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ঐক্য পরিষদের নেতারা।

ঐক্য পরিষদের তথ্যমতে, নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার ৭৫টি বিদ্যালয়ের সব সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি পালনের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার শোকজ করছেন। তারপরও তারা কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছেন। এছাড়া রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের সব শিক্ষককেও কর্মবিরতি পালনের জন্য শোকজ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষক নেতা শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘আমাদের কাছে বহু এলাকা থেকে শিক্ষকদের শোকজ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আসছে। কোথাও কোথাও মন্ত্রণালয়ের ও অধিদপ্তরের সচিব এবং মহাপরিচালকের (ডিজি) নির্দেশের কথা বলে আন্দোলনরত শিক্ষলদের তালিকা চাওয়া হচ্ছে। যাতে শিক্ষকরা ভয় পান। এটা স্পষ্টই হুমকি-ধামকি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

Advertisement

সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি,

১। সরকারের গঠিত কনসালটেশন কমিটির সুপারিশের যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে অ্যান্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ।

২। ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন।

৩। প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি প্রদান।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌনে ৪ লাখেরও বেশি শিক্ষক কর্মরত। তাদের মধ্যে সাড়ে তিন লাখই সহকারী শিক্ষক। বর্তমানে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বর্তমান বেতন গ্রেড ১১তম। আর সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম।

এএএইচ/এসএনআর/জেআইএম