ফলের রাজা আমের স্বাদে মুগ্ধ হয়না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই মৌসুমী ফল সবার প্রিয়। তবে কোনো জিনিস যতই ভালো হোক, অতিরিক্ত হলে তার খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই আমের উপকারিতার পাশাপাশি জেনে নিন বেশি খেলে কী কী সমস্যা হতে পারে।
Advertisement
আম খাওয়ার উপকারিতা
১. পুষ্টিগুণে ভরপুরআমে আছে ভিটামিন-এ, সি, ই, কে, বি৬, ফোলেট, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। বছরের মাত্র কয়েক মাস এই ফল খেয়ে এতোসব পুষ্টি উপাদান পাবে আপনার শরীর, যা সারা বছর আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেআমে থাকা ভিটামিন-সি ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে, যা সংক্রমণ ও বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।
Advertisement
আমে রয়েছে অ্যামাইলেজ জাতীয় এনজাইম, যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ফাইবার থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৪. চোখের জন্য ভালোআমে থাকা ভিটামিন-এ ও বিটা-ক্যারোটিন চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৫. ত্বক ও চুলের জন্য উপকারীআমে থাকা ভিটামিন-সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং বলিরেখা কমায়। এছাড়াও চুলের গোড়া শক্ত করে।
৬. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়কআমে থাকা কোয়ারসেটিন, অ্যাস্ট্রাগালিন ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার সেল বৃদ্ধি রোধ করতে পারে।
Advertisement
আমে থাকা পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
আম খাওয়ার অপকারিতা
১. ওজন বৃদ্ধি করতে পারেআমে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক শর্করা (ফ্রুক্টোজ) থাকে, তাই অতিরিক্ত আম খেলে ওজন বাড়তে পারে।
২. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকরআম খেলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। অর্থাৎ আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাঝারি থেকে বেশি। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের আম কম খাওয়া উচিত। বেশি আম খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে যা পরবর্তীতে আরও স্বাস্থ্যসমস্যা তৈরি করতে পারে।
৩. পেটের সমস্যা তৈরি করতে পারেঅতিরিক্ত পাকা আম খেলে ডায়রিয়া ও কাঁচা আম বেশি খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। কাঁচা আম অ্যাসিডিটিও বাড়াতে পারে।
৪. কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারেআমে, বিশেষ করে কাঁচা আমে অক্সালেট থাকে। যাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তাদের জন্য কাঁচা আম বেশি খাওয়া ঠিক নয়।
আম একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল, তবে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়াই ভালো। সঠিক পরিমাণে খেলে এর উপকারিতা পাওয়া যায় এবং অপকারিতা এড়ানো যায়। সেই সঙ্গে আপনার যদি আমে অ্যালার্জি থাকে তাহলে এই মৌসুমে ফল দিয়ে তৈরি যেকোনো ডেজার্ট খাওয়ার সময় সতর্ক থাকুন। কারণ ডেজার্টে অনেকেই আম ব্যবহার করেন।
এএমপি/এমএস