হজ পালনকারীদের হজের আমলগুলো করার সময় এসব আমলের সাথে সম্পর্কিত ইতিহাস স্মরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ।
Advertisement
জনমানবহীন মক্কায় হজরত হাজেরা (আ.) ও শিশু ইসমাইলের (আ.) কষ্ট, জমজম কূপ সৃষ্টি, হজরত ইবরাহিমের (আ.) কাবা ঘর পুননির্মাণ ও হজের ঘোষণা দেওয়ার ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে শায়খ আহমাদুল্লাহ লিখেছেন:
‘হজের সফরের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে ইবরাহিম (আ.) ও তার পরিবারের স্মৃতির নিদর্শন। আমরা যখন সাফা মারওয়া সায়ী করি, আমাদের স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে এক আজলা পানির জন্য দুই পাহাড়ের চূড়ায় হাজেরা (আ.)-এর অস্থির ছোটাছুটির দৃশ্য। আমরা যখন জমজমের পানি খাই, অন্তঃকর্ণে আমরা যেন শুনতে পাই পানির জন্য শিশু ইসমাইলের কান্নার শব্দ।
ইবারাহিম (আ.) যখন সন্তান ইসমাইলকে (আ.) নিয়ে কাবাঘর পুনর্নির্মাণ সম্পন্ন করেন, মহান আল্লাহ তাকে বিশ্ববাসীর উদ্দেশে হজের ঘোষণার নির্দেশ দেন।
Advertisement
এটা সেই সময়ের কথা, যখন মক্কায় জমজম কূপকে ঘিরে সদ্যই অল্পসংখ্যক মানুষের বসবাস শুরু হয়েছে। সেই সীমিত সংখ্যক মানুষের শহরে, রেডিও-টেলিভিশন কিংবা ইন্টারনেট আবিষ্কারের হাজার হাজার বছর আগে, ইবারাহিম (আ.)-কে আল্লাহ হজের ঘোষণা দিতে বললেন, বিশ্ববাসীর উদ্দেশে।
বাহ্যচোখে বিষয়টি অযৌক্তিক, অবাস্তব, বোধের অতীত। কিন্তু ইবারাহিম (আ.) আল্লাহর মনোনীত বান্দা ও নবী। যুক্তিতর্কের উর্ধ্বে উঠে আল্লাহর নির্দেশের সামনে মাথানত করাই যার কাজ।
পাহাড়ে উঠে তিনি বিশ্ববাসীর উদ্দেশে হজের ঘোষণা দিলেন। মহান আল্লাহ আপন কুদরতে সেই ঘোষণা ছড়িয়ে দিলেন ইথারে ইথারে, পৃথিবীর কোনায় কোনায়, অনাগত প্রজন্মের হৃদয়ে হৃদয়ে।
মুফাস্সিরগণ বলেন, সেদিন ইবারাহিম (আ.)-এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে যারা লাব্বাইক ধ্বনি উচ্চারণ করেছে, আল্লাহর ঘর জিয়ারত এবং হজের মহাসৌভাগ্য তারাই লাভ করেছে এবং করবে।
Advertisement
প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগের সেই অলৌকিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ জমায়েত হয় কাবা চত্বরে। কেয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে কাবা জিয়ারতের এই ঐশী সফর।
যারা হজের সফরে আছেন, চর্মচক্ষু বন্ধ করে অন্তর্চক্ষু উন্মীলিত করুন। হৃদয়ের চোখ দিয়ে খুঁজে ফিরুন ইতিহাসের হিরণ্ময় নিদর্শনাবলি। এই সুযোগ সবাই পায় না।
হে আল্লাহ, আমাদের হজকে কবুল করুন এবং আপনার ঘরের জিয়ারত না করিয়ে মৃত্যু দেবেন না। আমিন।’
ওএফএফ/এমএস