ক্যাম্পাস

দুই দিন হয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রেসপন্স আসেনি

দুই দিন হয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রেসপন্স আসেনি

৭০ শতাংশ আবাসন ভাতাসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনের দুই দিন হয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রেসপন্স আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে কাকরাইল মোড়ে অবসথান নিয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।

অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিগুলো যৌক্তিক। কিন্তু সরকার আদৌ আছে কি না বুঝতে পারছি না। দুই দিন হয়ে গেলো, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রেসপন্স আসেনি।

তিনি বলেন, এই সরকার জুলাই আন্দোলনের ওপর তৈরি হওয়া সরকার। এখানকার প্রতিটি শিক্ষার্থী জুলাই বিপ্লবী।সুতরাং আমাদের হুমকি দিয়ে লাভ নেই। আমরা ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়েছি, কাউকে উপদেষ্টা বানানোর জন্য আন্দোলন করিনি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

Advertisement

তিন দফা দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচিতে পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দাবি আদায়ে কাকরাইল মোড়ে অবস্থার করছেন আন্দোলনকারীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কাকরাইল মোড় থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখী সড়কের মুখেই ব্যারিকেড দিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ব্যারিকেডে ঘেঁষে অবস্থান করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তার ঠিক বিপরীত পাশে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে আন্দোলনকারীদের।

আরও পড়ুন বৃষ্টি উপেক্ষা করে আন্দোলনে অনড় জবি শিক্ষার্থীরা

এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে দাবি আদায়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

পরে বুধবার (১৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মৎস্যভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিং মোড়ে এলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই লংমার্চে পুলিশের সংঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের টিয়ারগ্যাস ও লাঠিপেটায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন অনেকে।

Advertisement

এদিন টিয়ারগ্যাস, লাঠিপেটায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক বেলাল, সহকারী প্রক্টর নাইম সিদ্দিকি, জবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমনসহ অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

সংঘর্ষের পর অধ্যাপক ড. মো. রইছউদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমার সহকারী প্রক্টরের ওপর পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচরণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখন থেকে যাওয়া হবে না।

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে।

২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে।

৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।

কেআর/ইএ/এএসএম