বাহারি ফুলে ছেয়ে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। যেন নানা বৃক্ষ আর ফুলে ভরা ভিন্ন এক রাজ্য। সড়কের মিরসরাই উপজেলার সোনাপাহাড় থেকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী পর্যন্ত সড়ক বিভাজকে থোকায় থোকায় ঝুলছে সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, জারুল আর রাধাচূড়া ফুল আর ফুল। এ মহাসড়ক এখন শুধু একটা পথ নয়; এটা যেন ফুলের বাগান। যেখানে প্রতিদিন প্রকৃতি নিজেই ফুলের ভাষা ও রঙের ছন্দে হাজারো মানুষকে অভ্যর্থনা জানায়।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কে ফুলের বাহারি শোভা পথ চলতে যে কাউকে মোহিত করে। মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট থেকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকায় সড়ক বিভাজকে ফুটন্ত ফুলের দোল দেখে মনে হবে- প্রকৃতির উষ্ণ অভ্যর্থনা। অপূর্ব সংমিশ্রণে ফুটে থাকা ফুলগুলো শুধু চোখ জুড়ায় না, যান্ত্রিক জীবনে প্রকৃতির এক নিঃশব্দ বার্তা দেয়। শুধু সৌন্দর্যই নয়, এসব গাছ পরিবেশ রক্ষা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে।
শহরের ব্যস্ততা, যানজট আর ক্লান্তি মাঝখানে জারুল-সোনালুর ফুল যেন কিছুটা প্রশান্তি এনে দেয়। বৈশাখের এ সময়টাতে বাংলার প্রকৃতিতে বাহারি ফুল অনন্য শোভা ছড়িয়েছে। গাছের শাখা ছাপিয়ে ঝুমকোর মতো ঝুলে আছে হলুদে ছাওয়া সোনালু ফুল। রক্তিম লালে উত্তাপ ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া। জারুল ফুলের বেগুনি রং মনমাতানো অপরূপ শোভা যে কারো মনকে ছুঁয়ে যায় নিঃসন্দেহে। সড়কের বিভিন্ন অংশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে অনেকে এসব গাছের সঙ্গে নিজের ছবি তুলছে। আবার মোবাইলে ধারণ করছে অপরূপ সৌন্দর্যের এমন দৃশ্য।
আরও পড়ুনকৃষ্ণচূড়ার লালে ছেয়ে গেছে শায়েস্তাগঞ্জ বাহারি সব ফুলে সেজেছে বরিশালের পথঘাট যে গাছে সারাবছর ফুল ফোটেকথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সড়কে লাগানো ফুলগাছ বেশ আকর্ষণ করে আমাদের। ফুলের ঘ্রাণ মনকে ফ্রেশ করে। মাঝে মধ্যে আমরা ফুল গাছের নিচে বসে থাকি।’
Advertisement
ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা নুরুর হুদা দুলাল বলেন, ‘মহাসড়কের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সরকার সোনালু, জারুল, কৃষ্ণচূড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ লাগিয়েছে। এগুলো দেখে খুবই ভালো লাগে। গ্রীষ্মকালের এ গাছের কারণে ছায়া থাকে। মানুষ ছায়ার মধ্যে বসে একটু বিশ্রাম নিতে পারে। সরকারের পাশাপাশি এ গাছগুলো আমাদের পরিচর্যা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।’
খইয়াছড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকরা খইয়াছড়া ঝরনায় ঘুরতে আসেন। পর্যটকরা ঝরনায় ঘুরতে এসে সোনালু, জারুল আর কৃষ্ণচূড়া ফুলের সঙ্গে ছবি তুলেন। পর্যটকের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ দেখা গেছে ফুলের গাছগুলো প্রতি।
সড়কে থাকা লেগুনা চালক হারাধন বলেন, ‘আমি নিয়মিত ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাতায়াত করি। সড়কের মাঝখানে ফুলগুলো দেখে আমাদের খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে এ ফুল দেখতে বেশ সুন্দর লাগে।’
চট্টগ্রাম শহরে নিয়মিত যাতায়াত কারী মো. আরাফাত হোসেন বলেন, ‘যখন বাসে করে শহরে যায় বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে সোনালু এবং জারুল ফুল গুলো দেখতে পাই। এ ফুল গাছ যেন সবসময় থাকে।’
Advertisement
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ মহাসড়ক যখন ফোর লেন করা হয় তখন সড়কের সৌন্দর্য বাড়াতে নানা রকম ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। আমাদের মোবাইল টিম এগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা করে।’
আরএইচ/জেআইএম