লক্ষ্মীপুরের রায়পুরায় পরকীয়ার অভিযোগে স্ত্রী রহিমা বেগমের (৩০) শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয় নুরুল আলম (৪৫)। এসময় নিজের শরীরেও আগুন দেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে উপজেলার উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নের চরপক্ষী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
এদিকে স্থানীয়রা দগ্ধ অবস্থায় রহিমা ও আলমকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সদর হাসপাতালে তাদের ভর্তি রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে রেফার করেছেন। রহিমার শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ ও আলমের পা-হাত-বুকসহ শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
দগ্ধ রহিমা উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের গাইয়ারচর এলাকার আব্দুল হামিদের মেয়ে ও আলম একই ইউনিয়নের চরপক্ষী গ্রামে আব্দুর মান্নানের ছেলে। আলম পেশায় ব্যবসায়ী।
নুর আলমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক বছর আগে আলম একই ইউনিয়নের গাইয়ারচর এলাকার রহিমাকে বিয়ে করেন। এটি দুজনরই দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। বিয়ের পর প্রায় ৯ লাখ টাকা ধারদেনা করে আলম চরে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছেন। সেই সুযোগে দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের কানিবগার চরের কাদির সিকদারের সঙ্গে রহিমা পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। ২০২৪ সালে ২২ জুলাই দোকান থেকে এসে তিনি কাদির ও রহিমাকে একা ঘরে দেখতে পায়। এ ঘটনায় পরে তিনি রায়পুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগসহ স্থানীয়দের জানান। কিন্তু ঘটনার কোনো সুরাহা হয়নি। এরমধ্যে রহিমা তার পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে অবাধে মেলামেশা শুরু করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আলম। এ ঘটনায় আলম তার স্ত্রী ও নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে।
Advertisement
আলম বলেন, কোথাও কোনো বিচার না পেয়ে প্রচণ্ড রাগ হয়। এতে পেট্রল কিনে বাড়িতে এসে দেখি কাদিরসহ তার লোকজন বসে আছে। এনিয়ে ঘরে ঢুকে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ক্ষোভে পেট্রল ঢেলে রহিমার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছি। নিজের গায়েও আগুন দিয়েছি।
এ ঘটনায় কথা বলা যায়নি রহিমার সঙ্গে। তবে তার ভাগনি লুবনা আক্তার বলেন, পেট্রল ঢেলে আমার খালার শরীরে আলম আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা আগুন লাগায়। এসময় ধস্তাধস্তি করায় খালার শরীরের আগুন আলমের গায়েও লাগে। তবে কি কারণে আগুন লাগানো হয়েছে সেটি জানি না।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরূপ পাল বলেন, দগ্ধ অবস্থায় দুই রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এরমধ্যে নারীর শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ ও পুরুষের প্রায় ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এর আগে দগ্ধদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালেও পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Advertisement
কাজল কায়েস/আরএইচ/জিকেএস