ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে দিনভর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রদল। এ সময় সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে যমুনায় অবস্থানের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১০টা থেকে শাহবাগ ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে জড়ো হতে শুরু করেন সংগঠনটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে তাদের কর্মসূচি। এসময় আশপাশে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে।
অবস্থান কর্মসূচিতে ‘আট দিন পেরিয়ে গেল, কেউ কিছু জানে না’, ‘আর চাই না, এনএসআইয়ের প্রক্টর’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ ঝুলে, প্রক্টর কী করে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’সহ নানান স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।
এ সময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, সাম্যের হত্যাকাণ্ডের পর আজ পর্যন্ত প্রকৃত হত্যাকারীদের শনাক্ত বা গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুধু ছাত্রদল সংশ্লিষ্ট হওয়ার কারণে এখনো কোনো সহমর্মিতা প্রকাশ করেনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
Advertisement
আরও পড়ুন
ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যা: গ্রেফতার আরও ৩ছাত্রদল নেতার ক্লাব থেকে যুবলীগ নেতা আটকতিনি আরও বলেন, যদি আমরা সাম্য হত্যার বিচার না পাই, তাহলে রাজপথ ছাড়ব না। সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, যত দ্রুত সম্ভব এই হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যদি ন্যায়বিচার না পায়, তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে বিচার আশা করবে?
তিনি সরকারের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, গত নয় মাস ধরে সেনাবাহিনী মাঠে থাকার পরও যদি পুলিশের এমন দুর্বলতা থাকে, তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার কী অবস্থা? সংস্কারের কথা বলা হলেও বাস্তবে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
ছাত্রদল সেক্রেটারি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি ছাত্রদলের নেতাকর্মীর খুনের বিচার না করে, সন্ত্রাসীদের যদি গ্রেফতার করতে গড়িমসি করে তাহলে ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মী ঘরে বসে থাকবে না। যমুনার পাশে অবস্থান নিতে আমরা বাধ্য হবো।
Advertisement
চলতি মাসের ১৩ তারিখ রাত ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে আহত হন সাম্য। রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন তার বড় ভাই শাহবাগ থানায় ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সাম্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে।
সাম্য হত্যার প্রতিবাদে টানা এক সপ্তাহ ধরে ছাত্রদল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগেও শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
এফএআর/এএমএ/এমএফএ