দেশজুড়ে

লক্ষ্মীপুরে খাল দখল উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন

লক্ষ্মীপুরে খাল দখল উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে তুলাতলি-মুসারখালে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। সাড়ে ৮ কিলোমিটার এ খালের বিভিন্ন অংশে ১৫ জন দখলদার রয়েছে। এ দখলদারদের উচ্ছেদের দাবিতে রোববার (৪ মে) সকালে উপজেলার তোরাবগঞ্জ এলাকায় মতিরহাট সড়কে কৃষকরা এ আয়োজন করেন। এসময় চাষাবাদের সুবিধার্থে বছরজুড়ে পানির জন্য তুলাতলি-মুসারখালটি খননের দাবি জানানো হয়।

Advertisement

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কমলনগর উপজেলা নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব শরিফুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কমলনগর উপজেলা সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, ছাত্রনেতা মো. নাঈম হোসেন, মাহফুজুর রহমান জাবেরি, বিএনপিকর্মী মো. শাহজাহান, কৃষক আবুল হাসেম, আব্দুল হক, আব্দুর রহিম ও আবদুল মতিন প্রমুখ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তোরাবগঞ্জ পশ্চিম বাজার সংলগ্ন এলাকায় স্কুলশিক্ষক ফারজানা আক্তার খালের মধ্যে পিলার দিয়ে মাটি ভরাট শুরু করে। এতে স্থানীয় গ্রামবাসী বাঁধা দিলে কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তিনি খালের মধ্যে পিলার স্থাপন করে। তিনি প্রায় ১০ ফুট চওড়া ও ৪০ ফুট লম্বা খাল দখলে করেন। স্থানীয়রা বিষয়টি উপজেলা ভূমি অফিসকে অবগত করেন।

পরে সার্ভেয়ার ও তহশিলদার স্থাপনা ভেঙে দখলমুক্ত করেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেই ফারজানা খালের একটি অংশের মালিকানা দাবি করে চারটি আরসিসি পিলার নির্মাণ করে। স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের বাঁধায় কিছুদিন তিনি ফের কাজ বন্ধ রাখেন। মার্চে খালের সীমানা নির্ধারণ করে ফারজানার জমি বুঝিয়ে দেয় প্রশাসন।

Advertisement

কিন্তু তিনি ফের নির্দেশনা অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ করেন। এতে বুধবার (৩০ এপ্রিল) উপজেলা ও স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তারা সরেজমিনে এসে তাকে খাল দখল থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেন।

কৃষক আবদুর রহিম ও আব্দুল হক জানান, খাল দখলের কারণে তাদের হাজার হাজার একর জমির ফসল তলিয়ে যায়। কৃত্রিম জলাবদ্ধতার শিকার হয় কয়েক হাজার এলাকাবাসী। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও খাল খনন করলে এ সমস্যা দূর হবে।

এ ব্যাপারে দখলদার ফারজানা আক্তার বলেন, আমি আমার জায়গায় দোকানঘর করছি। কাগজপত্রও আছে। এসিল্যান্ড কোন কাগজপত্র যাচাই-বাছাই না করে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে।

তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফজলুল কাদের জানান, সাড়ে ৮ কিলোমিটার খালের বিভিন্ন অংশে ১৫ জন অবৈধ দখলদার রয়েছে। দখলদাররা আমাকেও মামলার হুমকি দিয়েছে। পানি নিষ্কাশন ও সেচের জন্য খালটি বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) খনন করছে। ১৫ দিনের মধ্যে তোরাবগঞ্জে দখল হয়ে যাওয়া খালটি খনন শুরু হবে।

Advertisement

কমলনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আরাফাত হোসাইন বলেন, ৩০ এপ্রিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। খালের ওপর গড়ে তোলা স্থাপনার অংশটি সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা না সরালে আমরা ভেঙে দেব।

কাজল কায়েস/আরএইচ/এমএস