মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী পরিচয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করে আসছিলেন এক ব্যক্তি। তাও আবার দুই-এক বছর না, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চাকরি করে আসছিলেন তিনি। এর মধ্যে দুই দফা পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম পরিচালক হয়েছেন। ভুয়া পরিচয়ে চাকরি পেতে তাকে সহযোগিতা করেন তার মামা ও তৎকালীন নিয়োগ শাখার উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান মিয়া।
Advertisement
তবে অবশেষে ধরা পড়েছেন তিনি। বিভিন্ন তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। বিষয়টি উদঘাটিত হলে গতকাল বুধবার (২৮ মে) তার ওই নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার মামা শাহজাহান মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, মো. আবদুল ওয়ারেছ আনসারী ২০১৩ সালে ৩১তম বিসিএস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসেবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় তিনি চাকরি হিসেবে বিসিএসকে বেছে নেন। আর সেই সুযোগটি কাজে লাগান বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মিঞা। আব্দুল ওয়ারেছ আনসারীর জায়গায় নিজের ভাগনেকে নিয়োগ দেন। এজন্য ভাগনের নাম বদলে আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী রাখা হয়। ভুয়া পরিচয় ও কাগজপত্র ব্যবহার করে ২০১৩ সালের ২২ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন তিনি।
Advertisement
তাকে এই নিয়োগে সহযোগিতা করা তার মামা তৎকালীন নিয়োগ শাখার উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান মিয়া বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত। প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসায় মো. শাহজাহান মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিশদ তদন্তে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে স্থায়ী বহিষ্কারাদেশসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে প্রকৃত আব্দুল ওরায়েছ আনসারী বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে রয়েছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জাগো নিউজকে বলেন, তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় প্রতারক ওয়ারেছ আনসারীর চাকরির নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তার প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করেছেন সন্দেহে মো. শাহজাহান মিয়াকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার সংশ্লিষ্টতা থাকলে তিনিও স্থায়ী বরখাস্ত হবেন। এছাড়া আরও কেউ এমন সুযোগ নিয়েছেন কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ইএআর/ইএ/জিকেএস
Advertisement