জাতীয়

চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কর্মচারীদের নতুন কর্মসূচি

চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কর্মচারীদের নতুন কর্মসূচি

'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' বাতিলের দাবিতে আগামী রবি ও সোমবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কর্মচারীরা।

Advertisement

দাবি আদায়ে আগামী রোববার (১ জুন) তিনজন এবং সোমবার (২ জুন) দুজন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেবেন তারা। আপাতত কর্মবিরতি আর পালন করবেন না।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সচিবালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম এ কর্মসূচির কথা জানান।

তিনি বলেন, আলোচনা যাই হোক আমাদের একটা টাইম ফ্রেম থাকতে হবে। আমরা তো আজীবন অপেক্ষায় থাকবো না। ঈদের আগে আমাদের হাতে সময় আছে চারদিন। প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের আগামী শনিবার দেশে আসার কথা শুনেছি। সেক্ষেত্রে রোববার আমাদের আশাব্যঞ্জক একটি খবর পাওয়ার কথা। তারপরও আমরা আন্দোলন থেকে সরে যাইনি, সরে যাবো না।

Advertisement

এ নেতা বলেন, অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন করতে পারলে এরপরে অভিন্ন নীতিমালা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।

'আশা করি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সচিবরা প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের একটি ভালো রেজাল্ট দেবেন, আমরা সেই প্রত্যাশায় থাকবো।'

নুরুল ইসলাম বলেন, 'চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আগামী রোববার উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। সোমবার স্মারকলিপি দেওয়া হবে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছে।

অন্যদিকে মাঠ পর্যায়ে থেকে প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা প্রধানদের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

Advertisement

ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান আরও বলেন, আগামী রোববার আমরা ইতিবাচক খবর পেলে সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে, একটা ভালো ফলাফল নিয়ে ঈদটা উদযাপন করবো।

চার ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।এমন বিধান রেখে রোববার (২৫ মে) সন্ধ্যায় 'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' জারি করা হয়।

এর আগে গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদনের পর গত শনিবার (২৪ মে) থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করে আসছিলেন। এরপর সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যায়। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অবহিত করছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদসহ কয়েকজন সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।

আরও পড়ুন কর্মচারীদের দাবি জানানো হবে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে, তারপর সিদ্ধান্ত  সচিবালয় ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা, সোয়াট ও বিজিবি মোতায়েন  সচিবালয়ে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ ডিএমপির 

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে আন্দোলনরত কর্মচারীদের দাবির বিষয়টি বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জানাবেন সচিবরা। এরপর সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব।

বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের জানান, কর্মচারীদের 'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' প্রত্যাহারের দাবি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশে ফিরলে তাকে জানাবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ। এরপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

বুধবার কর্মচারী নেতারা ঘোষণা দেন, বৃহস্পতিবার থেকে সচিবালয়সহ সারাদেশে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন তারা। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন সরকারি কর্মচারীরা।

আরএমএম/এমএইচআর/জিকেএস