কাশ্মীরে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার জেরে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত।
Advertisement
গত শুক্রবার (২ মে) জারি করা এক নির্দেশনায় ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য মহাপরিচালকের (ডিজিএফটি) কার্যালয় জানায়, পাকিস্তান থেকে উৎসারিত অথবা পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে আসা সব পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন>>
হামলার জবাব দিতে সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিলেন মোদী ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধলে চীনের ভূমিকা কী হবে? শাহবাজ-জয়শঙ্করকে ফোনে কী বললেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীনির্দেশনায় বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থ রক্ষার স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। তবে বিশেষ অনুমতির মাধ্যমে কিছু পণ্যে ছাড় দেওয়া হতে পারে।
Advertisement
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর চালানো হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং সতর্ক করে জানায়, ভারত যদি সামরিক পদক্ষেপ নেয়, তবে তারাও পাল্টা জবাব দেবে।
হামলার পর থেকে ভারত একের পর এক কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা, ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল, কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং আকাশসীমা বন্ধ করা।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করেছে, আকাশসীমা বন্ধ করেছে এবং ভারতীয় কূটনীতিকদের দেশত্যাগে বাধ্য করেছে। পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সিন্ধু চুক্তির আওতায় তাদের বরাদ্দ পানি বন্ধ করলে সেটিকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে দেখা হবে।
দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে ভারত পাকিস্তান থেকে মাত্র ৪ লাখ ২০ হাজার ডলারের পণ্য আমদানি করে, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ২৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার। একই সময় ভারত থেকে পাকিস্তানে রপ্তানি কমে দাঁড়ায় ৪৪ কোটি ৭৭ লাখ ডলারে, যা আগের বছর ছিল ১১০ কোটি ডলার।
Advertisement
উত্তেজনার এই সময়ে আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও—উভয় দেশকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এ সপ্তাহে বলেছেন, হামলার পরিকল্পনাকারী, সহায়তাকারী ও পৃষ্ঠপোষকদের বিচার নিশ্চিত করতেই হবে।
সূত্র: ব্লুমবার্গকেএএ/