সিটিটিসির সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইশতিয়াক আহমদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। অভিযোগ দাখিলের পর সাংবাদিকদের কাছে নিজের ওপর চলা নির্যাতনের বর্ণানা দেন তিনি।
Advertisement
বুধবার (৩০ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তিনি এই অভিযোগ দায়ের করেন। এসময় তার সঙ্গে বেশ কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ড্রোন দিয়ে নজরদারি, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার ইশতিয়াক আহমদের বিষয়ে সাংবাদিকদের রাশেদ খান বলেন, ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটে নিয়ে যাওয়ার পরপরই এডিসি ইশতিয়াক আহমদ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
নিজের ওপর চলা নির্যাতনের বর্ণানা দিয়ে রাশেদ খান বলেন, সিটিটিসির সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ইশতিয়াক আহমদ পুলিশ নামধারী একজন সন্ত্রাসী। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনাকে কটূক্তির মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতারের পর তার দ্বারা আমি নির্মম ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়েছি। ২০১৮ সালের ১ জুলাই আমাকে ডিবি গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় আমি আক্রান্ত হই। এসময় ডিএমপিতে নিয়ে যাওয়ার পর পা দিয়ে রক্ত ঝরার কারণে আমাকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটে নিয়ে যাওয়ার পরপরই এডিসি ইশতিয়াক আহমদ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। মা-বাপ তুলে গালিগালাজ করে বলতে থাকেন- আমার চোরের মতো চেহারা, আমি শেখ হাসিনাকে গালি দিয়েছি।
Advertisement
আরও পড়ুন
প্রফেসর ইউনূস, দয়া করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন অভিনেতা সিদ্দিক ৭ দিনের রিমান্ডেতিনি বলেন, এরপর চেয়ার থেকে উঠে এসে বুট জুতা দিয়ে আমার অণ্ডকোষে লাথি মারেন। চিৎকার করে উঠলে আমাকে চড়-থাপ্পড়, লাথি-ঘুসি মারতে থাকেন। আমি দিশেহারা হয়ে বারবার তার পা জড়িয়ে ধরতে যাই। এরপর আমার হাতে ক্যান্ডকাপ লাগিয়ে দিতে বলেন। এরপর আমার হাত ও মুখ বেঁধে ফ্লোরে ফেলে মোটা লাঠি দিয়ে একটানা নির্যাতন করেন। এতে আমি কয়েকবার অজ্ঞান হয়ে পড়ি।
রাশেদ খান বলেন, আমি তখন আর কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। আমার স্বাভাবিক সেন্স ছিল না। মনে হচ্ছিলো, আমি মারা যাচ্ছি। দুনিয়ার কোনো চিন্তা আমার মধ্যে ছিল না। মনে হচ্ছিলো আমি জাহান্নামে আছি। এত অত্যাচারের পরও আমাকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের তথ্যমতে এই অপরাধী পুলিশ কর্মকর্তা জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারি ও ভিডিও ধারণ করেন। সুতরাং তার সর্বোচ্চ শাস্তি না হলে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
Advertisement
এফএইচ/কেএসআর/এমএস