জাতীয়

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব কতদূর?

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব কতদূর?

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মধ্যে আনতে দায়িত্ব নিয়েই সম্পদের হিসাব নেওয়ার উদ‌্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ছক অনুযায়ী সম্পদের বিবরণী দাখিলে সময় বাড়ানো হয় কয়েক দফা। সবশেষ সময় ছিল চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি। এর পরে আর সময় বাড়ানো না হলেও ঠিক কত সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পদের বিবরণী শেষ পর্যন্ত দাখিল করলেন সে হিসাব কোনো দপ্তরে নেই।

Advertisement

তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথমবার একটু দেরি করে হলেও প্রায় সব কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন।

ইতোমধ‌্যে সবার সম্পদের হিসাব চলে আসছে। হার্ডকপিতে হিসাব নেওয়ায় বিশাল একটা ভলিয়ুম হয়েছে। এটা মেনটেইন করা কঠিন। ভবিষ‌্যতে যাতে এগুলোর মধ‌্য থেকে কারও হিসাব সহজে বের করা যায় সেজন‌্য সাজিয়ে রাখার কাজ চলছে।-জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ডা. মো. নূরুল হক

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ১ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব সরকারি কর্মচারীকে সম্পদের হিসাব দিতে হবে।‌

Advertisement

পরের দিন ২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিস্তারিত জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। তিনি জানান, সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিবকে সভাপতি করে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিলের ফরম্যাট প্রণয়নসহ প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিতে বলা হয়েছিল। কমিটি ফরম্যাট ও সুপারিশ প্রতিবেদন দেওয়ার পর গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন জনপ্রশাসন সচিব। সেখানে তিনি জানান, সব সরকারি চাকরিজীবীকে এখন থেকে প্রতি বছর সম্পদের হিসাব দিতে হবে। ২০২৫ সাল থেকে প্রতিবছরের সম্পদের হিসাব ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দিতে হবে। তবে ২০২৪ সাল পুরো না পাওয়ায় ওই বছরের হিসাব ৩০ নভেম্বরের মধ‌্যে দেওয়ার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পরে সময় একমাস বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। শেষে হিসাব দাখিলের সময় আরও দেড় মাস অর্থাৎ ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

ভবিষ‌্যতে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে তখন ট‌্যাক্স রিটার্ন ও আমাদের কাছে দেওয়া সম্পদের হিসাব মিলিয়ে দেখতে পারবো। যেখানে গরমিল পাওয়া যাবে ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে।-গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহমান তরফদার

গত ২ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, সম্পদের হিসাব জমা না দিলে খবর আছে, সোজা কথা। আইনানুগ খবর আছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে থাকা সবশেষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মোট সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৮ জন। এর মধ্যে প্রথম থেকে নবম গ্রেডের কর্মকর্তা এক লাখ ৯০ হাজার ৯২৮ জন। দশম থেকে ১২তম গ্রেডের কর্মকর্তা দুই লাখ ৯৩ হাজার ৩৭৭ জন। এছাড়া ১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডের কর্মচারী ৬ লাখ ২০ হাজার ৯৭২ এবং ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারী তিন লাখ ৯৩ হাজার ৫৩৮ জন। অন‌্য কর্মচারী ৫ হাজার ৭০৩ জন। প্রশাসন ক‌্যাডার, উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত পদ এবং অন্য নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব জমা নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা ও তদন্ত অনুবিভাগ। সেখানে ছয় হাজারের কিছু বেশি হিসাব জমা পড়েছে। অন‌্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পদের হিসাব সিলগালা খামে জমা দেন।

সরকারের আদেশ মানতে তো কর্মচারীরা বাধ‌্য। আমাদের মন্ত্রণালয়ের অধীন যারা রয়েছেন তাদের সবার সম্পদের হিসাব আমরা পেয়েছি।-কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাং শওকত রশীদ চৌধুরী

Advertisement

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এরপর আর সময় বাড়ানো না হলেও সম্পদের হিসাব নেওয়া হয়েছে। প্রথমবার হিসেবে বিষয়টি একটু শিথিলভাবে দেখা হয়েছে।

আরও পড়ুন প্রশাসন সুশৃঙ্খলিত রাখতে কঠোর হচ্ছে আইন মন্ত্রণালয়গুলোতে কর্মকর্তা সংকট, কাজের ভারে ন্যুব্জ অনেকে সংশোধন হচ্ছে আইন/ স্ত্রীর সঙ্গে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক করলে সেটা ‘যৌন নির্যাতন’

এছাড়া হিসাব দাখিলের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা ও সমস‌্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে সবার। এবার হিসাব দাখিলের ক্ষেত্রে সে বিষয়গুলো সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। হার্ডকপিতে সম্পদের হিসাব নেওয়ার ক্ষেত্রে ব‌্যবস্থাপনাটা বেশ ঝামেলাপূর্ণ, তাই এটি অনলাইন করা যায় কিনা- সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়। ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯’ অনুযায়ী পাঁচ বছর পরপর সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল এবং স্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা বিক্রির অনুমতি নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন এ নিয়ম মানেননি, এ বিষয়ে সরকারেরও কোনো তদারকি ছিল না।

ছয় হাজারের হিসাব পেয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (শৃঙ্খলা-২ অধিশাখা) ডা. মো. নূরুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘সম্পদের হিসাব নিয়ন্ত্রণাধীন দপ্তরের কাছে আসবে মূলত। প্রশাসন ক‌্যাডারের কর্মকর্তা, উপ-সচিব থেকে সচিব পর্যন্ত কর্মকর্তারা এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অধীন সংস্থার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের সম্পদের সম্পদের হিসাব শুধু আমরা নিয়েছি।’ এখন পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ছয় হাজারের কিছু বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের হিসাব পেয়েছে বলেও জানান তিনি। যুগ্ম-সচিব বলেন, ‘ইতোমধ‌্যে সবার সম্পদের হিসাব চলে আসছে। হার্ডকপিতে হিসাব নেওয়ায় বিশাল একটা ভলিয়ুম হয়েছে। এটা মেনটেইন করা কঠিন। ভবিষ‌্যতে যাতে এগুলোর মধ‌্য থেকে কারও হিসাব সহজে বের করা যায় সেজন‌্য সাজিয়ে রাখার কাজ চলছে।’ ‘এখন যেহেতু প্রতি বছর হবে। তাই এত কাগজপত্র রাখার জায়গা সংকুলান করাও দুরূহ ব্যাপার। তাই আগামী বছর থেকে অনলাইনে সম্পদের হিসাব দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। অনলাইন হলে প্রয়োজন হলে যে কারও হিসাব এক ক্লিকে বের করা সম্ভব হবে। কাগজপত্র রাখার জন‌্য আলাদা জায়গাও লাগছে না।’ বলেন নূরুল হক। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘হিসাব দেওয়ার ক্ষেত্রে যে সমস‌্যাগুলোর মুখোমুখি হতে হয়েছে, সেগুলো এবছর দূর করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে। হিসাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ার পর যারা অবসরে গেছেন তাদের হিসাব দিতে হবে কিনা- এটা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। যারা স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই সরকারি চাকরিজীবী তাদের হিসাব দেওয়ার ক্ষেত্রে কে কোন হিসাব দেবে, দেবে না- সেটা নিয়ে সংশয় ছিল। যারা শিক্ষাছুটিতে বিদেশে আছেন, তারা হিসাব দেবেন কি না। এ বিষয়গুলো সামনে এসেছে।’ কেউ কেউ না বুঝে নিজের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে না দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হিসাব পাঠিয়েছেন। সিলগালা খামে হিসাব দিতে বলা হয়েছিল, কেউ কেউ সিলগালা খামে দিয়েছেন ঠিকই কিন্তু ওপরে কিছু লেখেননি, খুলে সেগুলো বুঝতে হয়েছে। সিলগালা খামে কেউ কেউ এসিআরও পাঠিয়েছেন। সেগুলো আবার ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এবার প্রথম হওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হিসাব দাখিলের জন‌্য উৎসাহিত করা হয়েছে। যেভাবে হোক, ভুল-শুদ্ধ হোক, জমা দিন। জমা দেওয়ার পর কী হবে সে বিষয়ে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালায় কিছু বলা হয়নি জানিয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, তবে এ হিসাব ভবিষ‌্যতে কাজে লাগবে। কারণ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে বা সরকার মনে করলে কারও দাখিল করা হিসাব বিবরণী বাস্তব অবস্থানের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পারে। সেখানে ব‌্যত‌্যয় পেলে ব‌্যবস্থা নিতে পারবে সরকার।

যা বলছে অন‌্য মন্ত্রণালয়গুলো

মূলত মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রশাসন অনুবিভাগ তাদের অধীন কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব জমা নিয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ-১) মো. আব্দুর রহমান তরফদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের অধীনে যারা রয়েছেন তাদের সবার সম্পদের হিসাব আমরা পেয়েছি। তবে অনেকে দেরি করে দিয়েছেন। জনপ্রশাসন বলেছে, আমরা হিসাব জমা রেখেছি। যেগুলো জনপ্রশাসনের নেওয়ার সেগুলো সেখানে জমা দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘ভবিষ‌্যতে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে তখন ট‌্যাক্স রিটার্ন ও আমাদের কাছে দেওয়া সম্পদের হিসাব মিলিয়ে দেখতে পারবো। যেখানে গরমিল পাওয়া যাবে ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে।’ নাম প্রকাশ না করে একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষের সম্পদের হিসাব। আমাদের এত কাজ। এগুলো সংরক্ষণ করা বেশ ঝামেলা। এটাঅনলাইনেকরাযেতেপারে। এতেসবারজন‌্যইসহজহবে। একটাসফটওয়‌্যারেরমাধ‌্যমে করা যেতে পারে। না হলে এগুলো মেনটেইন করার জন‌্য উইং খুলতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সম্পদের হিসাব দেওয়ার ফরম্যাটটি আরও সহজ করা যেতে পারে। তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে যাতে সব তথ‌্য নিয়ে আসা যায়, সেভাবেই ফরমটি করতে হবে। নগদ টাকা, স্থায়ী সম্পদ, গাড়ি-ফার্নিচারসহ এজাতীয় অন‌্য জিনিস। সম্পদের মোট টাকাটা যাতে হিসাবে আসে। বিস্তারিত তথ‌্য তো ট‌্যাক্স রিটার্নেই থাকে।’ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মোহাং শওকত রশীদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারের আদেশ মানতে তো কর্মচারীরা বাধ‌্য। আমাদের মন্ত্রণালয়ের অধীন যারা রয়েছেন তাদের সবার সম্পদের হিসাব আমরা পেয়েছি।’ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি খাদ‌্য মন্ত্রণালয়ে সম্প্রতি বদলি হয়ে এসেছি। আমি এর আগে তিন বছর পার্বত‌্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ছিলাম। আমরা সেখানে মোটামুটি সবারই সম্পদের হিসাব পেয়েছিলাম। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যেটা সেখানে পাঠানোর সেটা পাঠিয়েছি, যেটা রেখে দেওয়ার সেটা রেখে দিয়েছিলাম।’

যা আছে বিধিমালায়

‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর ‘সম্পত্তির ঘোষণা’ উপ-শিরোনামের ১৩ বিধিতে বলা হয়েছে- ‘প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীকে চাকরিতে প্রবেশের সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাহার অথবা তাহার পরিবারের সদস্যদের মালিকাধীন বা দখলে থাকা শেয়ার, সার্টিফিকেট, সিকিউরিটি, বীমা পলিসি এবং মোট পঞ্চাশ হাজার টাকা বা ততধিক মূল্যের অলংকারাদিসহ সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কে সরকারের কাছে ঘোষণা দিতে হইবে এবং উক্ত ঘোষণায় নিম্নোক্ত বিষয়াদির উল্লেখ থাকিবে- (এ) যে জেলায় সম্পত্তি অবস্থিত উক্ত জেলার নাম(বি)পঞ্চাশ হাজার টাকার অধিক মূল্যের প্রত্যেক প্রকারের অলংকারাদি পৃথকভাবে প্রদর্শন করিতে হইবে, এবং(সি) সরকারের সাধারণ বা বিশেষ আদেশের মাধ্যমে আরও যেই সমস্ত তথ্য চাওয়া হয়। (২) প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীকে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ডিসেম্বর মাসে উপবিধি-(১) এর অধীনে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রদত্ত ঘোষণায় অথবা বিগত পাঁচ বছরের হিসাব বিবরণীতে প্রদর্শিত সম্পত্তির হ্রাস-বৃদ্ধি হিসাব বিবরণী যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের নিকট দাখিল করিতে হইবে।’

যে সম্পদের হিসাব দিতে হয়েছে

সম্পদের হিসাব দিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি ও সম্পদ বিবরণী ফরম প্রকাশ করা হয়। সম্পদ বিবরণী ফরমে‘ক’অংশে সাধারণ তথ্যাবলির সঙ্গে সরকারি কর্মচারীর পরিবারের সদস্যদের (স্ত্রী/স্বামী/সন্তান) বিবরণ দিতে হয়েছে। ‘খ’অংশে সরকারি কর্মচারী নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে অর্জিত সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য উল্লেখ করবেন। স্থাবরসম্পদেরমধ্যেজমি(কৃষি ও অকৃষি), ইমারত, বসতবাড়ি, ফ্ল্যাট, খামার/বাগানবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সম্পদ থাকলে সেই বিবরণ দিতে হয়েছে।অস্থাবর সম্পদের মধ্যে অলংকারাদি, স্টকস/ শেয়ার/ডিবেঞ্চার/বন্ড/সিকিউরিটিজ, সঞ্চয়পত্র/ প্রাইজবন্ড/সঞ্চয় স্কিম, বীমা, নগদ/ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, ঋণ দেওয়া অর্থ, এফডিআর/ডিপিএস, জিপিএফ/সিপিএফ, মোটরযান (ব্যক্তিগত/বাণিজ্যিক), ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র/আসবাবপত্র, আগ্নেয়াস্ত্রসহ অন্য সম্পদের বিবরণ দিতে হয়েছে। ‘গ’ অংশে সরকারি কর্মচারী নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে সব তথ্য উল্লেখ করতে হয়েছে। আরএমএম/এএসএ/জিকেএস