শহরের খাল ও নালার উন্মুক্ত জায়গাগুলোতে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়ার কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এরইমধ্যে শহরের খাল-নালার উন্মুক্ত ৫৬৩ স্পটকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে চসিক। এসব স্পটে নেই কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী ও স্ল্যাব। স্পটগুলোতে বাঁশের সঙ্গে লাল ফিতার অস্থায়ী নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে আপাতত ঝুঁকি সারানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
Advertisement
গত ১৮ এপ্রিল নগরীর কাপাসগোলা হিজরা খালে রিকশা থেকে ছিটকে ছয় মাসের শিশু শেহরিজের মৃত্যুর পর টনক নড়ে সিটি কর্পোরেশনের। গত ৫ বছরে শহরের উন্মুক্ত খাল-নালায় পড়ে ১০ জনের প্রাণহানি হয়।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে নগরের ঝুঁকিপূর্ণ নালা-নর্দমা ও খালের একটি তালিকা করে সংস্থাটি। ওই তালিকা অনুযায়ী, নগরের ৪১ ওয়ার্ডে খাল-নালা রয়েছে এক হাজার ১৩৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়া খালের পাড় রয়েছে ১৯ হাজার ২৩৪ মিটার। উন্মুক্ত নালা রয়েছে পাঁচ হাজার ৫২৭টি জায়গায়। যেগুলোকে মরণফাঁদ হিসেবে ওই সময় অভিহিত করেন সংশ্লিষ্টরা। এ তালিকা প্রণয়নের সাড়ে ৩ বছর পার হলেও এখনো অরক্ষিত রয়েছে শহরের খাল ও নালাগুলো।
এরপর ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল জলাবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্প নিয়ে চসিক-সিডিএ একটি সমন্বয় সভা করে। ওই সভায় দুর্ঘটনা রোধে খাল ও নালার পাড়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণে জোর দেয় দুই সংস্থাই। এরপর কেটে গেছে তিন বছর। দুর্ঘটনা রোধে শহরের শতভাগ খাল-নালার নিরাপত্তা বেষ্টনী এখনো দিতে পারেনি কোনো সংস্থা। তবে এবার মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকা চিহ্নিত করা হয়।
Advertisement
এদিকে শিশু শেহরিজের মৃত্যুর পর উন্মুক্ত খাল-নালায় অস্থায়ী নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া শুরু করে চসিক। পাশাপাশি পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নগরবাসীর কাছ থেকে উন্মুক্ত খাল ও নালার তথ্য চাওয়া হয়। তথ্য সংগ্রহে দায়িত্ব দেওয়া হয় ৬ জন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে। এর প্রেক্ষিতে চলতি সপ্তাহে সংস্থাটির ৬টি জোনের আওতায় নগরের ৪১ ওয়ার্ডের তালিকা প্রস্তুত করা হয়। তালিকায় মোট ৫৬৩টি জায়গাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ নম্বর জোনে ৪৭টি, দুই নম্বর জোনে ৭৮টি, ৩নম্বর জোনে ৬৮টি, চার নম্বর জোনে ৭৪টি, ৫ নম্বর জোনে ৩৩টি এবং ৬ নম্বর জোনে ঝুঁকিপূূর্ণ স্থান আছে ২৬৩টি। তালিকা অনুযায়ী, দুর্ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন জায়াগায় বিভিন্ন পরিমাপের ৮৬৩ টি স্ল্যাব বসাতে হবে। এছাড়া বেষ্টনী নেই ১৪৬ জায়গায়। ম্যানহোলও নেই কয়েকটি স্পটে।
চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান বলেন, নগরীর উন্মুক্ত খাল-নালার তালিকা পেয়েছি। সামনে বর্ষা। তাই আপাতত বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া হবে। যেসব স্থানে প্রজেক্টের কাজ চলছে, সেসব জায়গায় ওয়াল দিয়ে স্থায়ী নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া হবে। নির্মাণাধীন নালায় স্ল্যাবের বিষয়টি চলমান থাকবে। যেখান থেকে আমরা তথ্য পাব সেখানেই স্ল্যাব বসানো হবে।
এমডিআইএইচ/এএমএ/জিকেএস
Advertisement