দেশজুড়ে

কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ, নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ৬ জনের নামে মামলা

কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ, নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ৬ জনের নামে মামলা

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে রাস্তার কাজ না করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) যোগসাজশে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলা শাখার উপসহকারী পরিচালক বাসেদ আলী বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন টাঙ্গাইল এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং ও মূল্যায়ন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, নাগরপুর উপজেলার সাবেক প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নাগরপুরের উপসহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম, সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাইনুল হক, মেসার্স ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী শহীদুর রহমান খান এবং মেসার্স সৈয়দ মজিবর রহমানের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ মজিবর রহমান।

Advertisement

এলজিইডির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে ঠিকাদার কাজ না করেই ৫২ লাখ ৫৯ হাজার ১০৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে দুদকের মামলায় উল্লেখ করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ও দপ্তিয়র ইউনিয়নের দুটি কাজ শেষ না করেই উধাও ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দুদক। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলা করে দুদক। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় এম আর আর আই ডি পি প্রকল্পের আওতায় দপ্তিয়ার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তেবাড়িয়া রাস্তার ১৬০০ মিটার বিটুমিন/ পিচ ঢালাই (বিসি) এবং তিনটি বক্স কালভার্ট নির্মাণের জন্য ২০১৯ সালের আগস্টে এলজিইডির সঙ্গে চুক্তি করে টাঙ্গাইল শহরের পাড়দিঘুলিয়ার ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি ২০ লাখ টাকা। পরে নামমাত্র নিম্নমানের খোয়া ফেলে ঠিকাদার আর আসেননি। অভিযোগ রয়েছে, এ কাজে পারস্পরিক যোগসাজশে ৩১ লাখ ১ হাজার ৫৯১ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

গয়হাটা থেকে ভারড়া রাস্তায় পিচ ঢালাই (বিসি) করার জন্য ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এলজিইডির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় সৈয়দ মুজিবুর রহমান অ্যান্ড অবনী এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় চার কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ কাজে আত্মসাৎ করা হয়েছে ২১ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৬ টাকা।

Advertisement

সূত্র আরও জানায়, এই কাজ দুটির বিল ২০২৩ সালের জুন মাসে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। দপ্তিয়রের রাস্তার চূড়ান্ত বিল ও পারফরম্যান্স সিকিউরিটিও ফেরত দেওয়া হয়েছে।

দুদক সূত্র বলছে, প্রকল্পের কাজ আংশিক বাস্তবায়ন করে কাজের চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। বাস্তবায়িত আংশিক কাজে নিচের বালুর স্তর ঠিক পাওয়া গেলেও খোয়া-বালু থিকনেস অনেক কম। পাওয়া গেছে নিম্নমানের খোয়া। অপর প্রকল্পে, আংশিক কাজ করে বিধি বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত বিল প্রদান করার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, জেলার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় রফিকুল ইসলাম ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে যোগসাজশে এসব টাকা আত্মসাৎ করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে রফিকুল ইসলাম লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। বর্তমানে রফিকুল ইসলাম এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং ও মূল্যায়ন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

টাঙ্গাইল জেলা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নূর আলম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খুব শিগগির অভিযাগপত্র জমা দেওয়া হবে।

Advertisement

আব্দুল্লাহ আল নোমান/এসআর/এমএস