বিশ্ব বিবেক বলে আর অবশিষ্ট কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। শনিবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত ফিলিস্তিন সংহতি দিবসের সমাবেশে এই কথা বলেন তিনি।
Advertisement
সমাবেশে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনে যা করছে তা কোনো যুদ্ধ না, এটা গণহত্যা। নির্বিচারে, নৃশংস উপায়ে এবং ঠান্ডা মাথায় গণহত্যা করা হচ্ছে। সেখানে যে গণহত্যা হচ্ছে তার একটি পক্ষ হলো পুঁজিবাদী পক্ষ। যারা ফ্যাসিবাদের রূপ ধারণ করেছে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘের অকার্যকর উপস্থিতি উল্লেখ করে সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব বিবেক বলে আর কিছু পৃথিবীতে অবশিষ্ট নেই। আছে শুধু একদিকে ক্ষমতাবান শোষক, অত্যাচারী আর অন্যদিকে আছে ক্ষমতাহীন অত্যাচারিত।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনকে মুছে ফেলতে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। সেখানে যাদের মারা হচ্ছে তার ৭০ শতাংশই নারী এবং শিশু। শিশুদের মেরে ফেলা হচ্ছে যাতে তারা ভবিষ্যতে ইসরায়েলকে প্রতিরোধ করতে না পারে। যুদ্ধবিরতির সব ধরনের নীতিমালা ভূলুণ্ঠিত করে ইসরায়েল আবার হত্যাযজ্ঞ শুরু করছে।
Advertisement
এসময় ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিরোধকে ন্যায়সংগত উল্লেখ করে ৫টি দাবি তোলার জন্য জনগণকে আহ্বান করে ফিলিস্তিনি সংহতি কমিটি,বাংলাদেশ। দাবিগুলো নিম্নরূপ-
১. ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদার ইসরায়েলি নারকীয় আগ্রাসন ও গণহত্যা অনতিবিলম্বে বন্ধ করা।
২. ইসরায়েলি দখলদারিত্ব ও নিয়ন্ত্রণের পরিপূর্ণ অবসান ঘটিয়ে ফিলিস্তিনের উভয় অংশের মানুষের জানমাল, জীবন-জীবিকা, নিরাপত্তা, পরিপূর্ণ মানবাধিকার এবং মর্যাদা রক্ষার ব্যবস্থা করা।
৩. আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন চুক্তি, প্রস্তাব ও শর্ত/মানদণ্ড অনুযায়ী স্বাধীন ও সার্বভৌম প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা।
Advertisement
৪. অবিলম্বে ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের গোপন ও পরোক্ষ সব সম্পর্ক ও লেনদেন ছেদ করার স্বচ্ছ ব্যবস্থা নেওয়া। ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে বাংলাদেশকে ইসলামী সম্মেলন সংস্থা ও জাতিসংঘে দৃঢ় ও স্বচ্ছ ভূমিকা নেওয়া।
৫. ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সারা বিশ্বে ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করে অর্থনৈতিক চাপ তৈরির বৈশ্বিক আন্দোলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে পণ্য বর্জনের আন্দোলনের অজুহাতে উচ্ছৃঙ্খল দাঙ্গাবাজরা দেশের বিভিন্ন স্থানে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট করে এই আন্দোলন এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে কলুষিত করেছে। সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও শ্রমিকদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এমন ঘটনার জন্য দায়ী সকলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের প্রদান করা।
এফএআর/এমআইএইচএস