পটুয়াখালীতে হু হু করে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনই এ জেলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী বাড়ছে।
Advertisement
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৭২ ডায়রিয়া রোগী বিভিন্ন হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১, কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩, গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭, মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮, দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩, দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭ এবং বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। তবে হাসপাতাল কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে রোগী ভর্তি হচ্ছেন এর থেকেও কয়েকগুণ বেশি রোগী বাড়ি বসে ডায়রিয়ার চিকিৎসা করছেন।
তবে এক সপ্তাহে পটুয়াখালী জেলায় ৪৫৩ রোগী ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আর গত এক মাসে ১৫৯৮ জন এবং এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ৫১১২ মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে কেউ মৃত্যুবরণ করেনি।
প্রতি বছর এসময় পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। বিগত বছরগুলোতে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ ও আইভি স্যালাইনের সংকট দেখা দেয়।
Advertisement
শনিবার (১৯ এপ্রিল) পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের পুরাতন ভবনের প্রবেশপথ থেকে শুরু করে চলাচলের রাস্তা, বারান্দা এমনকি টয়লেটের সামনেও রোগীদের বিছানা দেওয়া হয়েছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ২১ বেডের বিপরীতে ভর্তি আছেন ৭১ জন। এ কারণে বেডগুলোতে একসঙ্গে দুই-তিনজন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে রোগীদের ব্যক্তিগত পরিচ্ছনতা নিশ্চিত করতে না পারায় সুস্থ হতে সময় লাগছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট থাকলেও ডায়রিয়া রোগীদের সেবায় বিশেষ লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। দুই-তিন দিনের মধ্যেই রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন। পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে বর্তমানে ২০০০ ব্যাগ কলেরা স্যালাইন মজুত আছে। এছাড়া সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকেও ৪০০ ব্যাগ স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন মো. খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এখন এক হাজার সিসির ৩১৩৮ ব্যাগ এবং ৫০০ সিসির ৩৪০৬ ব্যাগ আইভি স্যালাইন মজুত আছে। যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে সে কারণে পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, ডায়রিয়ার প্রকোপ এখনো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে স্যালাইন ও ওষুধের রিকুজিসন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে স্থানীয়ভাবেও ওষুধ-স্যালাইন কিনে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হবে।
Advertisement
আব্দুস সালাম আরিফ/জেডএইচ/এমএস