কুড়িগ্রামের উলিপুরে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রামীণ সড়কের গাইড ওয়াল খুলে নিজ বাড়ির পুকুরে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
এ ঘটনায় এলাকাবাসী বুধবার (১৬ এপ্রিল) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
ওই কর্মকর্তার নাম মাজাহারুল আনোয়ার মামুন। তিনি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০২৪ সালে পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের নারিকেলবাড়ী ব্যাপারীপাড়ায় গ্রামীণ সড়কের পাশে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রউফ সরকারের পুকুরপাড় ঘেঁষে প্রায় ২৫০ ফুট গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়। এতে ওই এলাকার ব্যাপারীপাড়াসহ ভাটিয়াপাড়া ও থেতরাইগামী শত শত মানুষের চলাচলের সড়কটি ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পায়।
Advertisement
সম্প্রতি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মাজাহারুল আনোয়ার মামুন ক্ষমতার অপব্যবহার করে জেলা পরিষদের গাইড ওয়ালের প্রায় ১৫০ ফিট খুলে নেন। এরপর সেই গাইড ওয়াল তার নিজস্ব পুকুরে স্থাপন করেন। এ কারণে পুকুর পাড় ঘেঁষে থাকা সড়কটির মাটি ধসে পড়ে যাতায়াতে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
এ অভিযোগ দিয়ে স্থানীয়রা দুর্ভোগ কমাতে বুধবার (১৬ এপ্রিল) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
ওই এলাকায় গেলে কথা হয় স্থানীয় আব্দুল হাকিম, শফিকুল ইসলাম, লুৎফর হোসেনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে।
তারা বলেন, মানুষের সুবিধার জন্য জেলা পরিষদ থেকে কাচা রাস্তাটি রক্ষায় পুকুর ঘেঁষে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়। অথচ মামুন ক্ষমতার অপব্যবহার করে তা খুলে নিয়ে নিজের বাড়ির পুকুরের গাইড ওয়াল দেন। এতে করে আমাদের চলাচলের রাস্তাটি ধসে পড়া শুরু করে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হলে রাস্তার সব মাটি পুকুরে চলে যাবে। এতে করে গ্রামবাসীর চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। মানুষের সুবিধার্থে আমরা দ্রুত আগের জায়গায় গাইড ওয়াল স্থাপনের দাবি জানাই।
Advertisement
অভিযুক্ত পৌর কর্মকর্তা মাজাহারুল আনোয়ার গাইড ওয়াল খুলে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, আমার বাড়ি সংলগ্ন পুকুরের গাইড ওয়াল নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ নিয়েছিলাম। পরবর্তীতে পাশের ওই সড়কের অবস্থা খারাপ হওয়ায় মানবিক দিক বিবেচনা করে এলাকাবাসীর সুবিধার্থে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের পাশে পুকুর সংলগ্ন গাইড ওয়ালের কাজ হয়। কয়েকদিন আগে জানতে পারি উলিপুর পৌরসভা থেকে ওই সড়কটি মেরামত করা হবে। তাই গাইড ওয়াল খুলে বরাদ্দকৃত জায়গায় স্থাপন করেছি।
‘তবে যেটা আমি করতে পেরেছি এটা কেউ করতে পারবে না’ বলেও দাম্ভিকতা দেখান এ কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেডএইচ/জিকেএস