লক্ষ্মীপুরে ব্যাংকের ভেতরেই ছেঁড়া নোট পরিবর্তনে কাউন্টারে পাঠিয়ে এক নারী গ্রাহকের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে প্রতারক চক্র।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে ঘটনার একটি সিসিটিভির ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এরইমধ্যে ফুটেজটি ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ২৩ মার্চ লক্ষ্মীপুর চকবাজার মসজিদ মার্কেটে ইসলামী ব্যাংক জেলা শাখার ভেতরেই প্রতারক চক্রের তিন সদস্য অভিনব কৌশলে ওই গ্রাহকের টাকা নিয়ে যায়। একইদিন সেলিনা আক্তার নামে ওই গ্রাহক থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনার ২৪ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত বা আটক করতে পারেনি পুলিশ।
ভুক্তভোগী সেলিনা লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্ছানগর এলাকার খোরশেদ আলমের স্ত্রী।
Advertisement
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনজন লোক আগ থেকে ব্যাংকে অবস্থান করছিলেন। এরমধ্যে একজনের পরনে পাঞ্জাবি, মাথায় টুপি ও মুখে সাদা দাঁড়ি ছিল। অন্য দুজন শার্ট-প্যান্ট পরা ছিলেন। তাদের অহেতুক ব্যাংকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। টাকা জমা দেওয়ার জন্য রসিদ রাখার স্থানেই তাদের বেশি সময় দেখা যায়। একপর্যায়ে পাঞ্জাবি পরিহিত লোকটি সোফায় গিয়ে বসেন। সেখানেই টাকা গুনছিলেন ভুক্তভোগী সেলিনা। একপর্যায়ে পাঞ্জাবিওয়ালা লোকটি তার থেকে টাকা নিয়ে শার্ট-প্যান্ট পরিহিত লোকের কাছে গুনতে দেন। তাকে টাকা গুনতেও দেখা যায়। তখনও টুপিওয়ালা লোক ওই নারীর সঙ্গে বসে ছিলেন। তাদের আরেক সদস্য চারপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। এরমধ্যে যিনি টাকা গুনছিলেন, তিনি তার মানিব্যাগ থেকে কোনো একটি জিনিস (টাকা) বের করে ওই নারীকে দেন। পরে ভুক্তভোগী কাউন্টারের দিকে গেলে টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যান চক্রের তিনজন লোক।
সেলিনা বেগম বলেন, ‘আমার ব্যাংক হিসাবে ২ লাখ টাকা ছিল। টাকা উঠিয়ে সোফার ওপর এসে বসি। এরমধ্যে এক লাখ টাকা গুণে সাইড ব্যাগে রেখেছি। অপর এক লাখ টাকা গোনার সময় এক মুরুব্বি এসে বলে মা তোমার পাশে একটু বসি, এ কথা বলে তিনি বসেন। তিনি বলেন, টাকাগুলো চেক করে নিও, টাকা ছেঁড়া পড়ে। উনি আমাকে বলে দেখো- আমার দুই হাজার টাকা ছেঁড়া পড়েছে। এরপর কী হয়েছে আমি জানি না, আমি উনাকে সব টাকা দিয়ে দিয়েছি। একটু ছেঁড়া নোট নিয়ে আমাকে কাউন্টারে পাঠিয়েছে পরিবর্তনের জন্য। নোটগুলো পরিবর্তন করে এসে দেখি তারা নেই। তারা তিনজন লোক ছিল।’
লক্ষ্মীপুর ইসলামী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক আইয়ুব আলী বলেন, ঘটনার দিনই ভুক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে থানা থেকে পুলিশ এসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে যায়। ভুক্তভোগী গ্রাহক অন্য একজনকে টাকা গুনতে দিয়েছেন, ওরাই টাকা নিয়ে গেছে। টাকা গুনতে সমস্যা হলে আমার কাছেও তিনি আসতে পারতেন। অচেনা অজানা লোকদের টাকা দেওয়া ঠিক হয়নি।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজলুল হক বলেন, সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। পর্যালোচনা করে প্রতারক চক্রের সদস্যদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
Advertisement
কাজল কায়েস/এফএ/জিকেএস