দেশজুড়ে

বন্ধ মেঘলা মিনি চিড়িয়াখানা, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে স্থানান্তর

বন্ধ মেঘলা মিনি চিড়িয়াখানা, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে স্থানান্তর

বান্দরবানের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র মেঘলায় অবস্থিত মিনি চিড়িয়াখানাটি আদালতের নির্দেশে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি চিড়িয়াখানার বন্যপ্রাণীগুলো ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে স্থানান্তর করা হয়েছে।

Advertisement

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে বান্দরনবান জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ এস এম এমরানের আদেশের প্রেক্ষিতে চিড়িয়াখানা বন্ধ এবং প্রাণীগুলো স্থানান্তর করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রায়ে পর আজ চিড়িয়াখানায় থাকা সব প্রাণী চট্টগ্রামের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়ার পর তা দ্রুত কার্যকর করার জন্য দুটি ভাল্লুককে স্থানান্তর করা হয়েছে।

চিড়িয়াখানাটিতে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই ভাল্লুক, সজারু, হরিণ, বনমোরগ, বানর, সাপসহ অনেক বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী প্রদর্শন করা হচ্ছিল। প্রাণীদের প্রতি অমানবিক আচরণ, অপর্যাপ্ত খাবার ও চিকিৎসার অভাব নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনা চলছিল।

Advertisement

বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা নুর জাহান বেগম জানান, ‘সরেজমিনে তদন্ত করে দেখি, এই চিড়িয়াখানার কোনো অনুমোদন নেই। প্রাণীগুলোকে আয়না ঘরের মতো অন্ধকার, সংকীর্ণ খাঁচায় রাখা হচ্ছিল। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি।’

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ (সংশোধিত ২০১৭) অনুযায়ী, এ ধরনের কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি অফিসার ডা. হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন জানান, ‘ভাল্লুকটির একটি পা ফাঙ্গাস সংক্রমণে মারাত্মকভাবে ফুলে গেছে। এটি একটি সংবেদনশীল অবস্থা এবং সময়মতো চিকিৎসা না পেলে প্রাণীটি মারা যেতে পারে।’

তিনি আরও জানান, প্রাণীগুলোকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা এবং ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রথম ধাপে দুটি অসুস্থ ভল্লুককে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তী পর্যায়ে ১৩ মায়া হরিণকেও পার্কে নিয়ে যাওয়া হবে।

Advertisement

মেঘলা এলাকার তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ার বাসিন্দা রিপন তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘৫-৬ বছর আগেও এখানে বহু প্রজাতির সাপ, বানর, অজগর, বনরুইসহ অনেক বন্যপ্রাণী ছিল। খাঁচাগুলো এতটাই ছোট ছিল যে, গরমের দিনে প্রাণীগুলো কষ্ট পেতে দেখেছি। খাবারও ঠিকমতো দিত না।’

‘সেভ দ্য নেচার অব বাংলাদেশ’ -এর চেয়ারম্যান এ এন এম মোয়াজ্জেম রিয়াদ বলেন, ‘এ চিড়িয়াখানা বন্ধ এবং প্রাণীগুলোর মুক্তি দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল। অনেক দিন ধরে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম।’

নয়ন চক্রবর্তী/এএইচ/জিকেএস