১৮ এপ্রিল ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী ‘বড়াইবাড়ী দিবস’ রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।
Advertisement
বুধবার (১৬ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বড়াইবাড়ী বিপ্লবে নেতৃত্বদানকারী অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম লাল মিয়া বলেন, ২০০১ সালে বিএসএফ পাদুয়ায় যখন বিডিআরের সঙ্গে হেরে যায় তখন প্রতিশোধ নিতে বড়াইবাড়ীতে হামলা চালায়। এত বড় একটি ঘটনা কোনো দিন কোনো বিগত সরকার মিডিয়ার সামনে আনেনি। সেদিন ক্যাম্পে ছিলাম আমরা মাত্র ৯ জন। বিপরীতে ৫৫০ জন বিএসএফ সদস্য হামলা চালান। সেদিন আমাদের সাহায্য করেছেন গ্রামবাসী। গ্রামের প্রতিটি মানুষ দেশপ্রেম থেকে আমাদের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ৭১ এ আমরা যেভাবে যুদ্ধ করেছি, সেদিনও আমরা সেভাবে যুদ্ধ করেছি। এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে অবশ্যই স্বীকৃতি দিতে হবে।
এছাড়াও ভারতীর আগ্রাসন মোকাবিলায় বর্তমানে ভারতের সঙ্গে সীমান্তবর্তী প্রতিটি গ্রামের মানুষকে রাইফেল (চালানো) ট্রেনিং দেওয়া উচিত বলে জানান তিনি।
Advertisement
আরও পড়ুন
বড়াইবাড়ী দিবস আজ ফ্যাসিস্টদের আশ্রয় বাংলার মাটিতে হতে দেওয়া হবে নাবিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ১৮ এপ্রিল একটা ঐতিহাসিক দিবস। সেদিন অনেক সাহসিকতার সঙ্গে বিডিআর আর গ্রামবাসী মোকাবিলা করেন, অথচ সেটা আমরা ভুলে গেছি। প্রতিনিয়ত বিএসএস আমাদের ভাইদের গুলি করে, অথচ ভারত অন্যান্য দেশের সঙ্গে থাকা সীমান্তে গুলি চালায় না। সেখানে কোনো হত্যাকাণ্ড নেই। আমাদের নির্বিচারে গুলি করেছিল শুধু আমাদের নতজানু সরকারের কারণে।
তিনি বলেন, ভারত শুধু একটি দলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায়, তারা এই দেশের জনগণ কিংবা রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায় না। আমাদের ছাত্র-জনতা বুঝিয়ে দিয়েছে, ভারত চাইলে এখানে কোনো নতজানু সরকার বসাতে পারবে না। বর্তমানে বাংলাদেশে কাউকে ক্ষমতায় আসতে ভারতের দরকার হবে না। ভারত আর বাংলাদেশকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শামসুদ্দিন বলেন, আজকের এই আয়োজনের প্রেক্ষাপট মানুষকে জানাতে চাই, ২০০১ সালে যখন ভারত বড়াইবাড়ী গ্রাম দখল করতে চায়, তখন আমাদের বিডিআর আর গ্রামবাসী যুদ্ধ করে এই গ্রাম বাঁচিয়েছেন। এই যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের জাতীয় বীর স্বীকৃতি দিতে হবে। যারা আহত আছেন তাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দিয়ে ভাতা প্রদান করতে হবে।
Advertisement
তিনি বলেন, গত বছর বড়াইবাড়ী দিবস পালন করতে দেয়নি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা গত বছর ভারতকে খুশি করতে বড়াইবাড়ি যে শহীদ মিনার রয়েছে সেটা বন্ধ রাখে।
তিনি আরও বলেন, বড়াইবাড়ী সীমান্তের লড়াই পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে এটা জানাতে হবে।
২০০১ সালে বড়াইবাড়ী যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, সেদিন ভোর ৫টায় দেখি ভারতের বিএসএফ আমাদের গ্রামে ঢুকে পড়েছে। তাৎক্ষণিক বিডিআরকে সেটা জানাই। এর কিছুক্ষণ পর আমাদের গ্রামে যুদ্ধ শুরু হয়। আমি তখন বিডিআরের সঙ্গে ছিলাম। এলাকার মানুষও ছিল।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, সহকারী সদস্যসচিব গালিব ইহসান, সৌরভ সাকিল, জাতীয় বিপ্লবী ছাত্রপরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ, সদস্যসচিব, ফজলুর রহমান।
আরএএস/ইএ/এমএস