গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাকায় আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রায় সহস্রাধিক মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয় ১০টি মেডিকেল বুথ, যেখানে দিনব্যাপী চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন তারা।
Advertisement
মূল অনুষ্ঠান শুরুর সময় ধাক্কাধাক্কি ও ভিড়ের কারণে অনেকে আহত হন। এসময় স্বেচ্ছাসেবীরা আহতদের চিকিৎসা বুথে আনলে তাদের জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।
শনিবার (১২ এপ্রিল) মেডিকেল বুথে এই সেবাদান কার্যক্রমের নেতৃত্বে ছিল ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম। এছাড়াও সার্বিক সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ মেডিকেল কমিউনিটি, ডক্টরস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, রিদম বাংলাদেশ এবং মেডিকেল দাওয়াহ সোসাইটি নামক চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন। সেবা নিশ্চিত করতে এসব সংগঠন মিলে ২০টির মতো অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করে।
ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম থেকে বলা হয়, মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এক হাজারেরও বেশি মানুষকে চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা সেবা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২০০ জনের বেশি ছিলেন হিটস্ট্রোক আক্রান্ত, ২০ জন ছিলেন হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগী এবং প্রায় ১০০ জনের বেশি ছিলেন সমাবেশে এসে নানাভাবে আহত হওয়া মানুষ। এছাড়া ৫০ জনের বেশি রোগীকে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আশপাশের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অসংখ্য মানুষের মাঝে বিনামূল্যে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে।
Advertisement
এনডিএফের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্চ ফর গাজা শীর্ষক গণজমায়েতকে কেন্দ্র করে স্থাপিত এসব মেডিকেল বুথগুলোতে দিনব্যাপী ছিলো রক্তচাপ ও গ্লুকোজ পরীক্ষা করার সুযোগ। এছাড়াও বিশুদ্ধ পানি, খাবার স্যালাইন এবং প্রয়োজনীয় নানা ধরণের ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।
সেবামূলক এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের এক মুখপাত্র বলেন, যারা গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে রাস্তায় নেমেছেন, তাদের যেন স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত না হতে হয়, সেই চিন্তা থেকেই আমরা এই উদ্যোগ নেই। এটি ছিল চিকিৎসকদের একটি মানবিক দায়িত্ব পালন, যেখানে রাজনীতি নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য।
তিনি আরও বলেন, মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে সারাদিনব্যাপী চিকিৎসক, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবকরা নিবেদিতভাবে কাজ করেন। অনেকেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসকরা দ্রুত সেবা দেন। অ্যাম্বুলেন্সগুলো প্রস্তুত ছিল, যাতে জরুরি রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো যায়। এই আয়োজন প্রমাণ করেছে সংকটময় সময়ে চিকিৎসাসেবার হাত বাড়িয়ে দেওয়া শুধু পেশাগত দায়িত্ব নয়, বরং একটি মানবিক দায়বদ্ধতা।
এএএম/এএমএ/জেআইএম
Advertisement