বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ সংক্রান্ত বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তাৎক্ষণিক ও কৌশলগত উদ্যোগের প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ ইপিজেড ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশন (বেপজিয়া)
Advertisement
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর পাঠানো চিঠিতে বেপজিয়ার প্রেসিডেন্ট শাহাদাত মোশাররফ খান এই প্রশংসা করেন।
চিঠিতে তিনি বলেন, রপ্তানি খাতের উদ্বেগ নিরসনে সরকার দৃঢ় নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছে। তাৎক্ষণিক সভা আহ্বান এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এরই মধ্যে সরাসরি উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ শুরু করেছে। নতুন শুল্ক বাস্তবায়ন তিন মাসের জন্য মুলতবি রাখার জন্য সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস আমাদের বিনিয়োগকারী সমাজ এবং রপ্তানিমুখী শিল্পখাতে ব্যাপক স্বস্তি এনে দিয়েছে।
‘বিশেষভাবে আমরা সরকারের এ উদ্যোগের প্রশংসা করি যে, বাংলাদেশের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়তা করা হচ্ছে। প্যাকেজিং, লেবেলিং ও সার্টিফিকেশন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা যৌক্তিককরণ, কিছু পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা বাতিল এবং শুল্ক কার্যক্রম সহজীকরণের মতো অশুল্ক বাধাসমূহ অপসারণে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ এক গঠনমূলক ও ভবিষ্যতমুখী দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় বহন করে।’
Advertisement
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করা উচিত হয়নি: পল ক্রুগম্যান মার্কিন পণ্য আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ বাস্তবায়নে শুল্ক স্থগিতে চিঠি আমাদের মূল বিষয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোশাহাদাত মোশাররফ খান বলেন, এই পদক্ষেপগুলো শুধু যে বাংলাদেশের ন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলনের প্রতি অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ তা নয়, বরং বিশ্ব অংশীদারদের প্রতিও একটি স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, আমাদের অর্থনীতি উন্মুক্ত, স্বচ্ছ এবং দায়িত্বশীল।
তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি বরাবর বাণিজ্য উপদেষ্টার আসন্ন পত্রকেও স্বাগত জানাই, যেখানে নেওয়া পদক্ষেপসমূহ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকবে। এ পদক্ষেপগুলো নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত ও সহযোগিতামূলক বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে ভাবমূর্তি আরও শক্তিশালী করবে।
প্রধান উপদেষ্টাকে বেপজিয়া প্রেসিডেন্ট বলেন, তৈরি পোশাক খাত এবং টেক্সটাইল, ইলেকট্রনিক্স, চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং অন্যান্য বহুমুখী খাতের কোম্পানিগুলো—যুক্তরাষ্ট্রের হঠাৎ নীতিগত পরিবর্তনে গভীর উদ্বেগে ছিল। আপনার সময়োপযোগী কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ আমাদের রপ্তানিকারকদের ও স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে বহুল কাঙ্ক্ষিত আশ্বাস ও আস্থা ফিরিয়ে এনেছে। আমাদের অনেকেই এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছ থেকে চালান বিলম্বের নোটিশ পেতে শুরু করেছে। আপনার সক্রিয় অবস্থান ইপিজেড ভিত্তিক সব শিল্প খাতের জন্য স্থিতিশীলতা এনেছে, যাদের সাফল্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কিত।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্য স্বার্থ রক্ষায় ও অগ্রসরে আপনার অব্যাহত প্রচেষ্টায় বেপজিয়া সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার নীতিগত কূটনীতি ও বাস্তবভিত্তিক সম্পৃক্ততা এ সংকট নিরসনে সহায়ক হবে এবং আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে। আপনার নেতৃত্বে নেওয়া সব উদ্যোগে বেপজিয়া সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি রক্ষা ও এগিয়ে নিতে আমরা বদ্ধপরিকর।
আরএএস/ইএ/এমএস