ময়মনসিংহে কমেছে সব ধরনের সবজি ও মাছের দাম। এছাড়া মুরগি ও ডিমের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে ময়মনসিংহ শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজারে ঘুরে দেখা যায়, মাছ, সবজিসহ মুরগির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা ও মাছের দাম ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহ গাজর ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। বেগুন ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০, আমঝুরি বেগুন (ছোট বেগুন) ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৪০, শসা ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চিচিঙ্গা ৫০, বরবটি ৬০, কাঁচা মরিচ ৪০, পটল ৪০, করলা ৪০, টমেটো ৩০, লতা ৫০, কাঁচা পেঁপে ৩০, ঢেঁড়স ৪০, ঝিঙা ৫০, ধুন্দল ৫০, সজনা ১০০ ও মিস্টি লাউ ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লেবু ৬-৮ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহ মাছের বাজারে অস্বস্তি থাকলেও সেই উত্তাপ কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহ রুই ও কাতল ২৫০-৩৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২৩০-৩০০ টাকায়। মৃগেল ১৫০-২১০ কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১৫০-২০০, বাউশ (ক্রস, কালো রঙের) ২০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৮০-৩৪০ ও সিলভার কার্প ১৬০-২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১৫০-২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তেলাপিয়া ১৭০-২৩০, পাঙাশ ১৫০-১৮০, কৈ ২১০-৩৩০, শিং ২৩০-৫৫০, পাবদা ২৮০০-৩৪০, শোল ৪৮০-৭৭০, ট্যাংরা ৪৬০-৭৬০, গুলশা ৩২০-৯৫০ ও টাকি ২৯০-৪৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
Advertisement
এদিকে গরু ও খাসির মাংসের দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। কোনো কারণ ছাড়াই দাম বাড়ানো হয়েছে। গত সপ্তাহ গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ৭৮০ ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে ব্রয়লার মুরগি দাম। যা ১৭০, সাদা কক ২৫০ ও লাল কক ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির ডিম ৪০ টাকা ও হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সবজি কিনতে আসা আতহার আলী জাগো নিউজকে বলেন, সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকজন এ দামেও স্বস্তি পাচ্ছে না। দাম আরও কমানো প্রয়োজন। কারণ, দাম বেশি বাড়িয়ে, কম কমানো হয়।
খাসির মাংস কিনতে আসেন মোজাফফর আলী। তিনি বলেন, দোকানে টানিয়ে রাখা মূল্য তালিকার চেয়েও কেজিতে ১০০ টাকা বেশি চাচ্ছে বিক্রেতারা। গরুর মাংসের দামও ৩০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। এক কেজি খাসির মাংস কিনতে এসে এক কেজি গরুর মাংস কিনেছি। তবুও ৩০ টাকা বেশি দিতে হয়েছে।
সবজি বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, বাজারে সবজির প্রচুর সরবরাহ। এছাড়া পাইকারিতে কিছুটা কম দামে কিনতে পেরেছি বলে কিছুটা কমে বিক্রি করছি।
Advertisement
একই মন্তব্য করেন মাছ বিক্রেতা নাদিম মিয়া। বলেন-মাছের তুলনায় ক্রেতা কম। বিক্রিও কিছুটা কম হচ্ছে। ফলে বাজারে সব মাছ আকারভেদে কিছুটা কম দামে বিক্রি করছে।
দোকানে টানিয়ে রাখা মূল্যতালিকার চেয়ে বেশি টাকা রাখার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে খাসির মাংস বিক্রেতা আবদুল হাফিজ বলেন, লিখে রাখা দামে পোষাচ্ছে না। কারণ, খাসি আগের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তবুও নিয়ম মেনে অন্য ব্যবসায়ীদের মতো আমিও মূল্য তালিকা টানিয়ে রেখেছি। তবুও বাধ্য হয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। কারও কাছ থেকে যতসামান্য টাকা বেশি চাইলেও অনেকে দেন না। তবে পড়ালেখা জানেন না এমন কিছু ক্রেতাদের কাছ থেকে কেজিতে কিছু টাকা বেশি পাওয়া যায়। যদিও এক দোকান থেকে আরেক দোকানে দাম যাচাই করলে মূল্য তালিকা অনুযায়ীই ওইসব ক্রেতারাও কিনতে পারেন।
ক্রেতাদের এভাবে ঠকানো ঠিক কিনা? এমন প্রশ্নে সরল স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেন, চাইলেই তো আর সবাই বাড়তি টাকা দেয় না। সুযোগ বুঝে বাড়তি দাম চাওয়া হয়।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, দোকানে টানানো মূল্য তালিকার চেয়ে বাড়তি টাকা রাখতে পারবে না। লিখে রাখা দামের চেয়ে বেশি নেওয়ার অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এএইচ/জিকেএস