দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আবারও দাপট দেখিয়েছে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বেড়েছে। তবে অন্য খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম কমেছে। ফলে সার্বিক শেয়ারবাজারে পতনের পাল্লা ভারী হয়েছে। এর মাধ্যমে ঈদের পর লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
Advertisement
ঈদের পর প্রথম কর্যদিবস গত রোববার শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হলেও প্রায় সবকটি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ে। এতে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় শেয়ারবাজার। তবে একদিন পরই গতকাল সোমবার অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দরপতন হয়। যার প্রভাবে সার্বিক শেয়ারবাজারেও পতনের পাল্লা ভারী হয়।
এ পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারার দেখা মেলে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
আরও পড়ন
Advertisement
কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টার পর বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ড দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখলেও, দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার। এতে সার্বিক শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার তালিকায় বড় হয়। দিনের লেনদেন শেষে ৩৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪টির। বাকি দুটির মধ্যে একটি লেনদেন হয়নি, অন্যটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অন্যদিকে ডিএসইতে সবখাত মিলে ১৪৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৪টির। আর ৫৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম কমার তালিকা বড় হলেও ভালো কোম্পানি বা ‘এ’ গ্রুপের বেশি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকা রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০০টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ৯৪টির দাম কমেছে। আর ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ২৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৫৩টির দাম কমেছে এবং ৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৭টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
Advertisement
সার্বিকভাবে দাম কামার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৬৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
প্রধান মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৮৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৬৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন
শেয়ারবাজার ছাড়ার প্রবণতা থামেনি বিদেশিদেরএ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাইনপুকুর সিরামিকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকার। ১৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, নাভানা ফার্মা, বিচ হ্যাচারি, ইস্টার্ন হাউজিং, স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস, এসিআই লিমিটেড এবং ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১২টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১০ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
এমএএস/এমকেআর/এমএস