দেশজুড়ে একযোগে পালিত হয়েছে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে টানা ৯ দিনের ছুটি উপভোগের সুযোগ পেয়েছে নগরবাসী। টানা এই ছুটি শেষ হচ্ছে আগামীকাল শনিবার (৫ এপ্রিল)। সব পর্যায়ের অফিস আদালত খুলবে রোববার (৬ এপ্রিল) থেকে শুরু হবে।
Advertisement
তবে ছুটির সময় ঘনিয়ে এলেও রাজধানীতে কাটেনি ছুটির আমেজ। ফলে নগরের সড়কে যাত্রীর স্বল্পতায় কমেছে যানবাহন চলাচলও। শুক্রবার (০৪ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর বেশ কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিনে রাজধানীর মিরপুর, কল্যাণপুর, শ্যমলী, আগারগাঁও, কলেজগেট, আসাদগেট এলাকা ও গুগল ম্যপের সহযোগিতায় জনবহুল লোক চলাচলের স্থানগুলোয় দেখা গেছে, সড়কে গণপরিবহনের চলাচল খুবই সীমিত। যাত্রীর উপস্থিতি খুব একটা নেই বললেই চলে। তবে ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল ছিল চোখে পড়ার মতো।
এদিকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চলাচল করলেও অধিকাংশ গণপরিবহনে আসন ফাঁকাই থাকছে। চেনা ঢাকার মতো নেই যানজটও। সেই সঙ্গে গণপরিবহনের গেটে যাত্রী ঝোলার চিত্রও চোখে পড়েনি। এছাড়া যাত্রীর অভাবে গণপরিবহনগুলো রাজধানীর বিভিন্ন বাস পয়েন্টে এসে কিছু সময়ের জন্য অপেক্ষায় থাকতেও দেখা যায়।
Advertisement
রাজধানীর শ্যমলী বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় লিওন হোসেন নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, রাস্তা ফাঁকা। খুব কম সময়ে চলে আসতে পেরেছি। কোথাও কোনো যানজটে পড়তে হয়নি।
শিকদার রাব্বি নামের অন্য এক যাত্রী বলেন, জাহাঙ্গীর গেট থেকে শ্যামলী এসেছি মাত্র ১৫ মিনিটে। কোথাও কোনো জ্যামে পড়া লাগেনি। শুধু আগারগাঁও সিগন্যালে ২/৩ মিনিট সময় লেগেছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কথা হয় মামুন নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। মিরপুর-১১ নম্বর থেকে আগারগাঁও এসেছেন তিনি।মামুন বলেন, সাধারণত অফিস চলাকালীন মিরপুর এলাকায় যানজটে বের হতেও ভয় লাগে। কিন্তু ঈদের পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো জ্যামে পড়তে হয়নি।
তিনি বলেন, প্রথমে গাড়ি পেতে একটু সময় লেগেছে। ৫-৭ মিনিট অপেক্ষার পর গাড়ি পেয়েছি। তবে গাড়িতে সেভাবে যাত্রীও ছিল না। সিটও ফাঁকাই ছিল।
Advertisement
গুলিস্তানে ধামরাই পরিবহনের চালকের সহকারী মিজান বলেন, আগের দিনগুলোর তুলনায় কিছুটা যাত্রী আছে।
তিনি বলেন, রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম, তাই যাত্রী টুকটাক পাওয়া যাচ্ছে।
মৌমিতা পরিবহনের চালকের সহকারী মো. জীবন বলেন, খুব একটা যাত্রী নেই। যাত্রী না থাকার কারণে দুইদিন গাড়ি নিয়ে বেরই হয়নি। আজও একই অবস্থা।
তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে যাত্রী পাওয়া যাবে।
এদিকে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে টানা ৯ দিনের ছুটির ফাঁদে পড়েছে দেশ। প্রথমে ঈদ উপলক্ষে পাঁচদিন টানা ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে সেখানে নির্বাহী আদেশে ৩ এপ্রিলও ছুটি ঘোষণা করা হয়। এর ফলে এবার ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা নয়দিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
গত ২৯ মার্চ শুরু হয় ঈদুল ফিতরের ছুটি। কিন্তু নির্ধারিত ছুটি শুরুর আগের দিন ২৮ মার্চ ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার। একই সঙ্গে ওইদিন পবিত্র শবে কদরেরও ছুটি। ফলে সরকারি হিসেবে গত ২৯ মার্চ থেকে শুরু হয় ঈদুল ফিতরের পাঁচ দিনের ছুটি। অর্থাৎ ২৯, ৩০, ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি। এর মধ্যে ঈদের দিন সাধারণ ছুটি। আর ঈদের আগের দুদিন এবং পরের দুদিন নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ছুটি শেষে অফিস খোলার কথা ছিল ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার। তার পরের দুই দিন আবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার। এখন ৩ এপ্রিলও নির্বাহী আদেশে ছুটি হওয়ায় ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা নয়দিন ছুটি ভোগ করছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কেআর/এএমএ/এএসএম