শিক্ষা

আন্দোলনে ছাত্রলীগের সমর্থন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলো শিক্ষার্থীরা

আন্দোলনে ছাত্রলীগের সমর্থন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলো শিক্ষার্থীরা

ছয় দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগের সমর্থন দেওয়াকে ‘ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান’ করেছেন আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন, কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে এ ধরনের জঘন্য, নিকৃষ্ট ও স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাত পৌনে ১২টার দিকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা উল্লেখ করেন, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত ও কুখ্যাত ছাত্রলীগের কিছু সন্ত্রাসী কর্মী ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’-এর প্রতি সমর্থনের নামে পোস্ট, বিবৃতি ও প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা অত্যন্ত স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে এই সমস্ত জঘন্য, নিকৃষ্ট, স্বার্থান্বেষী ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং আমরা তাদের তথাকথিত সমর্থন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।

তারা আরও বলেন, যে সংগঠন বছরের পর বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাস, দখলদারত্ব, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করেছে এবং যে নিষিদ্ধ সংগঠন টেকনিক্যাল সেক্টরের বারোটা বাজিয়েছে; কারিগরি উন্নযনের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে, তারাই আবার সমর্থন দিচ্ছে এটা হাস্যকর, কৌতুক ও জোকার সংগঠনের পরিচয় দিচ্ছে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সমর্থন আমাদের জন্য অপমানজনক এবং অগ্রহণযোগ্য।

Advertisement

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের নেতারা উল্লেখ করেন, কারিগরি ছাত্র আন্দোলন একটি স্বতন্ত্র, অহিংস ও ছাত্রবান্ধব আন্দোলন। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের অনুপ্রবেশ বা সমর্থন চাই না। যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে নিজেদের নাম জড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে, অথবা দেশকে অস্থিতিশীল করতে পাঁয়তারা চালাচ্ছে, তাদের আমরা চিহ্নিত করছি এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রযোজনে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

‘একটি কথা কঠিনভাবে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সক্রিয় যোদ্ধা। আপনাদের মতো নিষিদ্ধ জংলি সংগঠনকে এবং স্বৈরাচারকে পতন ঘটিয়ে, জনগণের তথা আমাদের সরকার গঠন করেছি। এ সরকার আমাদের ছাত্র জনতার সরকার। এ সরকারকে কোনোভাবেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে আমরা কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ পড়তে দেবে না। বর্তমান ছাত্র জনতার সরকারকে সর্বোচ্চ পরিমাণ সহযোগিতা করে আমাদের অধিকার আদায় করে নেব। আশা করবো, সরকারপক্ষ ও প্রধান উপদেষ্টা এবং শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের যৌক্তিক ও ন্যায্য ছয় দফা দাবি দ্রুত সময়ে বাস্তবায়ন করে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠাতে সহযোগিতা করবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা দীর্ঘ ৮ মাস ধরে আমাদের অধিকার নিয়ে কথা বলতেছি। আমরা একটি কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাচ্ছি এ আন্দোলন যত দীর্ঘ হবে, তত বেশি ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারীর দোসরা ফায়দা লুটতে চেষ্টা করবে। আমাদের সরকার তথা ছাত্র জনতার সরকারের নামে নানা রূপ ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা চালাবে। কাজেই আমাদের অনুরোধ থাকবে আপনারা এই বিষয়ে খুব দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন এবং যৌক্তিক ছয় দফা বাস্তবায়ন করুন।

‘আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, এ আন্দোলনে কোনো প্রকার সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক অনুপ্রবেশকারী বা অপকর্মে লিপ্ত ব্যক্তিদের স্থান নেই। কারিগরি শিক্ষার্থীদের পক্ষে আমরা যেকোনো অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি’ বলেও উল্লেখ করেন আন্দোলনের নেতারা।

Advertisement

এএএইচ/জেএইচ