জাতীয়

কাজ করে খাই, ঈদ-চাঁদের হিসাব করি না

কাজ করে খাই, ঈদ-চাঁদের হিসাব করি না

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। ঈদের দিন নতুন জামা পরে ঈদের নামাজ পড়া, কোলাকুলি করা, সালামি নেওয়া, ভালো খাবার খাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া, আরও কত কী! কিন্তু সবার জন্য কি ঈদ আনন্দের?

Advertisement

আব্দুর রহিম (ছদ্মনাম)। রিকশা চালান মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকায়। তার গ্রামের বাড়ি খুলনা জেলার রূপসা উপজেলায়। ঈদের দিন সকালে ঈদের নামাজ শেষে রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন।

'সকাল সকাল রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। আজ ঈদের দিন। সবাই নতুন জামা পরে ঈদের নামাজ পড়তে যায়, দেখে ভালো লাগে। আমিও ঈদের নামাজ পড়েছি, বলছিলেন তিনি।

নিজের জীবনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত ৪ বছর ধরে আমি রিকশা চালাই। আগে সাভারের একটা গার্মেন্টসে কাজ করতাম। কিন্তু করোনা আসার পর চাকরিটা চলে যায়। এরপর বাড়ি চলে যাই।

Advertisement

'সব ঠিক হওয়ার পর ঢাকায় চলে আসি। আবার গার্মেন্টসে কাজ খুঁজি। কিন্তু অনেক খোঁজার পরও কাজ না পেয়ে মিরপুরে একটা স'মিলে কাঠ চেরাইয়ের কাজ নেই। কিন্তু বেতন কম হওয়ায় কাজটা ছেড়ে দেই। এরপর একদিন একটা গ্যারেজে গিয়ে রিকশা চালানোর কাজ নেই।

বাসার কেউ জানে যা যে আমি ঢাকায় রিকশা চালাই। সবাই জানে আমি গার্মেন্টসে কাজ করি, বলছিলেন তিনি।

ঈদ বলতে আমাদের কিছু নেই। ঈদের দিনেও রিকশা চালাই। কাজ করি, খাই। ছেলেদের পরিচিতজনরা অনেক সময় কাপড় বানিয়ে দেয়। এর বাইরে জরুরি প্রয়োজনে লুঙ্গি-শার্ট কেনে। এজন্য ঈদ চাঁদ হিসাব করি না, তিনি বলেন।

ঈদে বাড়ি যাবেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার বাসায় দুইটা ছোট বাচ্চা আছে। এবারের ঈদে তাদের জন্য কিছু কিনতে পারি নাই। আজকে যদি ইনকাম ভালো হয় তাহলে তাদের জন্য জামা আর বউয়ের জন্য একটা শাড়ি কিনবো। তারপর কাল বাড়ি যাবো।

Advertisement

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, এখন সবাই ব্যাটারির রিকশায় চড়ে, ভাড়া কম আবার তাড়াতাড়ি যাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের প্যাডেল রিকশায় কেউ না চড়লে আমরা খাবো কী? প্রতিদিন জমা দিতে হয়ে ৩০০ টাকা। কিন্তু আমাদের ইনকাম আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে।

তিনি বলেন, আসলে ঈদ সবার জন্য এক না। আমাদের মতো গরিব মানুষের কাছে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার নামই ঈদ।

এসআরএস/এমএইচআর/জেআইএম