ঈদের শেষ সময়ের কেনাবেচার সময় এখন। কারণ, মোটাদাগে পোশাক পরিচ্ছদের কোনাকাটা অনেকেরই প্রায় শেষ। ফলে ক্রেতারা এখন ছুটছেন প্রসাধনী, ঘড়ি, চশমা, ব্যাগ, ওড়না, মেহেদীর মতো টুকিটাকি অনুষঙ্গের দোকানে। শুক্রবার (২৮ মার্চ) মৌচাক, মালিবাগ ও তালতলা এলাকার মার্কেটগুলোতে ছোট ছোট এমন অনুষঙ্গের দোকানে বেশি ভিড় দেখা গেছে।
Advertisement
যে কারণে ওই তিন এলাকায় মৌচাক ও আনারকলী মার্কেটের মাঝের ফুটপাত, তালতলা মার্কেটের চারপাশের ফুটপাতের দোকান ও মৌচাক থেকে মালিবাগ এলাকা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের ছোটখাটো দোকানে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। অনেক স্থানে পা ফেলার জায়গা ছিল না। বিশেষ করে ওইসব দোকানে নারীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো।
চৌধুরীপাড়া থেকে মৌচাক মার্কেটে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে ওড়না, চুড়ি ও ঘড়ি কিনতে আসা তাসফিয়া বলেন, ঈদের বড় কোনাকাটা শেষ তিনদিন আগেই। কিছু পোশাক গিফটও পেয়েছি। এখন এসেছি সেগুলোর সঙ্গে মাচিং করে টুকিটাকি বাজার করতে। কিন্তু প্রতিটা দোকানে ভিড়, পা দেওয়ার জায়গা পাচ্ছিনা।
পরশ হোসেন এসেছেন মায়ের জন্য একটি ব্যাগ ও নিজে পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে একটি স্যান্ডেল কিনতে। তিনি বলেন, কাল গ্রামে চলে যাব। কেনাকাটা আগেই সেরেছি। এরমধ্যে মনে হলো মায়ের জন্য একটা ব্যাগ নেই। পাঞ্জাবির সঙ্গে স্যান্ডেলও লাগবে। তাই এলাম।
Advertisement
মৌচাকের ফরচুন মার্কেটে পারপেল কসমেটিকসের কর্ণধার শরিফ বলেন, বেচাকেনা এখন জমেছে। তবে অন্যান্য বছর এ সময় আরও জমজমাট ছিল। সে হিসেবে ক্রেতার চাপ কম।
মৌচাক মার্কেটের পাশের গলিতে ঢুকতে দেখা গেল, সেখানে অস্থায়ী দোকানগুলোতে ভিড় ঠেলে কেনাকাটা করা কঠিন। এত ক্রেতা যে বিক্রেতারা দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেনা।
সেখানে কসমেটিকস বিক্রেতা ফিরোজ হোসেন বলেন, এগুলো (প্রসাধনী) বিক্রি করতে বেশি সময় দিতে হয়। সকাল থেকে ক্রেতা আসছে প্রচুর। সময় পাচ্ছি না।
মৌচাকে আয়েশা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে বেশ কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে দেখা গেল, দম ফেলার ফুরসত নেই সেখানকার অনেক দোকানিরই। গেঞ্জি, জুতা, ব্যাগ, বেল্ট, চশমার ভাসমান দোকানে একের পর এক ক্রেতা আসছেন। পছন্দ হলে ক্রেতা-বিক্রেতা করছেন দরদাম। এসব সামাল দিতে গিয়ে কথা বলার সুযোগই পাচ্ছেন না বিক্রেতারা।
Advertisement
সেখানে বিদ্যুৎ হোসেন বলেন, যা বিক্রি এর সবচেয়ে বেশি আজ থেকে চাঁদরাত পর্যন্ত। দুপুর থেকে বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। রাতেও কম হবে না। এখন ছোট ছোট পণ্যের বিক্রি ভালো হবে।
এনামুল নামের এক বেল্ট-মানিব্যাগ বিক্রেতা বলেন, ফুটপাতে যারা কেনাকাটা করতে আসেন, তাদের হাতে টাকা আসে শেষ মুহূর্তে। তখন এ ধরনের জিনিস কেনেন। এখন কেনাবেচা প্রতিদিন বাড়বে।
ঈদের আগে ফুটপাতে শুক্র-শনিবার এমন ভিড় সামাল দিতে হয় এসব টুকিটাকি পণ্যের দোকানিদের। তাই চাপ থাকলেও তাতে অভ্যস্ত তারা।
শুক্রবার দেখা গেল, মৌচাক থেকে মালিবাগ মোড় হয়ে শান্তিনগর পর্যন্ত এলাকায় সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে ভাসমান দোকানগুলোতে হাজার হাজার মানুষ। প্রায় প্রতিটি দোকানের সামনে উপচে পড়া ভিড়। মানুষের চাপে সড়কে গাড়ি চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। ফুটপাতে হেটে যাওয়াও দুস্কর।
তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় স্বল্প আয়ের লোকজন ফুটপাতে কেনাকাটা করেন বেশি। আবার অন্যরাও বড় বড় মার্কেট শেষে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে আসেন ওইসব ছোট দোকানে।
এনএইচ/এএমএ/এএসএম