২০২৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরবর্তী সময়ে রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে। সেই আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ লক্ষ্যে ‘দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ এর অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ’ প্রকল্প তৈরি করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ৩৭ কোটি টাকা।
Advertisement
এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের সঠিক ইতিহাসের দলিল তৈরি ও সংরক্ষণের জন্য একটি প্রস্তাব তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে।
প্রকল্পটিতে প্রচার ও বিজ্ঞাপন খাতে ব্যয় বরাদ্দ ২০ লাখ টাকা। বই ও জার্নাল কেনায় ১০ লাখ টাকা। অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ ব্যয় ১৫ লাখ, পেট্রল-অয়েল ও লুব্রিকেন্ট ব্যয় ৫ লাখ এবং ভ্রমণ ব্যয় ৩০ লাখ টাকা রাখার জন্য বলা হয়েছে।
Advertisement
অফিস সামগ্রীর মধ্যে কম্পিউটারের জন্য ৫ লাখ টাকা, পরামর্শক ফির জন্য ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, সম্মানি বাবদ ২০ লাখ টাকা, অনুষ্ঠান বা উৎসব খাতে ১০ লাখ এবং সাধারণ থোক হিসাবে ১০ লাখ টাকা রাখার প্রস্তাব করা হয়।
আরও পড়ুন:
চব্বিশের বাংলাদেশ: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রামাণ্য দলিলএছাড়া গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ এর সমন্বয়ক, ছাত্রনেতা, আহত ছাত্র-জনতা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকারভিত্তিক ৩০০টি ডকুমেন্টারির ব্যয় এবং বিশেষায়িত ফিল্ম মিউজিয়াম তৈরির খরচ প্রকল্পে রাখতে বলা হয়েছে।
প্রকল্পের পরিচালক ইয়াকুব আলী জাগো নিউজকে বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের দলিল সংগ্রহে নতুন করে প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ৩৭ কোটি টাকা। তবে ব্যয় চূড়ান্তভাবে কমতে পারে। নতুন করে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) নেওয়া হবে।
Advertisement
ইয়াকুব আলী আরও বলেন, ১৯৭১ সালের মতোই ২০২৪ সালের ইতিহাস সংগ্রহ করা হবে। সম্পূর্ণ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে মেটানো হবে।
অসমাপ্ত রেখেই সমাপ্ত ১৯৭১ সালের দলিল সংগ্রহ প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার ‘দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনা সরকার ২০২১ সালে এ প্রকল্প নিয়েছিল। তবে বর্তমানে প্রকল্পটি অসমাপ্ত রেখে সমাপ্ত করা হচ্ছে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সভাকক্ষে প্রকল্পের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির নবম সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মো. আবদুল জলিল। সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রথমে প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এরপর প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়। এখন প্রকল্পটির কাজ অসমাপ্ত রেখেই বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প সমাপ্ত প্রসঙ্গে প্রকল্পের পরিচালক ইয়াকুব আলী বলেন, এই প্রকল্পের প্রধান প্রধান কাজ কিন্তু সমাপ্ত হয়েছে। শুধু প্রশিক্ষণ ও কিছু যন্ত্রপাতি কেনা কাজ বাকি আছে। তাই প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত রেখে নতুন করে প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।
এমওএস/এমএইচআর/এমএস