দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া আহত হয়েছে আরও ৩০ জন। তাছাড়া এখনো কয়েকটি এলাকায় আগুন জ্বলছে।
Advertisement
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে, আহতদের মধ্যে ২২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হতাহতদের বেশিরভাগের বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে।
দক্ষিণ কোরিয়ার দাবানলের কারণে এরই মধ্যে ২৩ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে ১৭ হাজার হেক্টরের মতো বন ধ্বংস হয়েছে।
দাবানল নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কয়েক হাজার কর্মীর পাশাপাশি পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। দেশটিতে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারও আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নিয়েছে।
Advertisement
বুধবার (২৬ মার্চ) দক্ষিণ কোরিয়ার উইসেয়ংয়ের পাহাড়ি এলাকায় আগুন নেভানোর সময় একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট নিহত হন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দেশটির দুর্যোগ ও নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান লি হান-কিউং বলেছেন, ইতিহাসের বৃহত্তম এই দাবানল বিশ্বজুড়ে জলবায়ু সংকটের কঠিন বাস্তবতা উন্মোচিত করেছে। এমনটি আমরা আগে হতে দেখিনি। যা আমরা আগে কখনও দেখিনি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে এই মৌসুমে গড়ের চেয়ে অর্ধেক বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এর আগে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু এই পরিস্থিতিকে ‘অভূতপূর্ব সংকট’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল, যা নতুন রেকর্ড তৈরি করছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ হাজারের বেশি সেনাসহ হাজার হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হেলিকপ্টারও নিয়োগ করা হয়েছে। তবে প্রবল বাতাসের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।
Advertisement
এরই মধ্যে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগুনে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৩০০ বছর পুরোনো গৌনসা মন্দির, যা ৬১৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ায় দাবানল সাধারণত বিরল ও এতে প্রাণহানির ঘটনাও কম ঘটে। তবে চলমান এই দুর্যোগে এখন পর্যন্ত যে সংখ্যক মৃত্য হয়েছে, তা এটিকে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দাবানলে পরিণত করেছে।
সূত্র: এএফপি
এসএএইচ