দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানলে এ পর্যন্ত অন্তত ১৮ জন নিহত ও ১৯ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু এই পরিস্থিতিকে ‘অভূতপূর্ব সংকট’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল, যা নতুন রেকর্ড তৈরি করছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ হাজারের বেশি সেনাসহ হাজার হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হেলিকপ্টারও নিয়োগ করা হয়েছে। তবে প্রবল বাতাসের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
এখন পর্যন্ত ২৩ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগুনে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৩০০ বছর পুরোনো গৌনসা মন্দির, যা ৬১৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল।
বন বিভাগ জানিয়েছে, জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত জোসন রাজবংশের (১৩৯২-১৯১০) সময়কার একটি স্থাপত্য নিদর্শনও দাবানলে ধ্বংস হয়েছে।
এদিকে, উইসিয়ং কাউন্টির পাহাড়ে একটি অগ্নিনির্বাপণ হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘটনার কারণ তদন্ত করছে কর্তৃপক্ষ।
জাতীয় অগ্নি নির্বাপণ সংস্থা মঙ্গলবার দাবানল মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে, যা এই বছর প্রথমবারের মতো দেওয়া হলো।
Advertisement
দক্ষিণ কোরিয়ায় দাবানল সাধারণত বিরল এবং এতে প্রাণহানির ঘটনা কম ঘটে। তবে চলমান দাবানলে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হওয়ায় এটি দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দাবানলে পরিণত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর বনভূমি পুড়ে গেছে, যা আকারের দিক থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম দাবানল।
দেশটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, বুধবার দাবানলপ্রবণ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই এবং বৃহস্পতিবার মাত্র ৫ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্তমানে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যা শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য দায়ী। এ বছর দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২৪৪টি দাবানল হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৪ গুণ বেশি।
দক্ষিণ কোরীয় সরকার দাবানলের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে অবৈধ আগুন জ্বালানোকে চিহ্নিত করেছে এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
সূত্র: বিবিসিকেএএ/