গাজীপুরে ঈদের ছুটি দু’দিন বৃদ্ধির দাবি ও কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন চার কারখানার শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকালে হোতাপাড়া ও কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় শ্রমিকরা এই বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।
Advertisement
ঈদুল ফিতরের ছুটি দুইদিন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে প্রায় এক ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকালে ইউটা কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
পুলিশ, শ্রমিক ও এলাকাবাসী জানান, এবার ঈদুল ফিতরের ছুটি ১০ দিনের ঘোষণা দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়া এলাকায় ইউটা কারখানার শ্রমিকরা তা মেনে নেননি। ঈদে ১০ দিনের ছুটির পরিবর্তে ১২ দিন ছুটির দাবি জানান শ্রমিকরা। কিন্তু শ্রমিকদের দাবিও কারখানা কর্তৃপক্ষ মেনে নেয়নি। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা হোতাপাড়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন।
Advertisement
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এসময় প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থেকে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, সারাদেশেই ঈদের ছুটি ১০ দিন করা হয়েছে। কিন্তু ইউটা কারখানার শ্রমিকরা তা না মেনে ১২ দিন ছুটির দাবি করেন। এক পর্যায়ে তারা মহাসড়কটি অবরোধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় প্রায় এক ঘণ্টা শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন, এতে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
অপরদিকে মহানগরীর কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় আলীফ গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার গেটে এসে অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে মূল ফটকের সামনেই অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন।
বন্ধ কারখানা গুলো হলো, স্বাধীন গার্মেন্টস লিমিটেড, স্বাধীন ডাইং লিমিটেড ও স্বাধীন প্রিন্টিং লিমিটেড। তিনটি কারখানা মহানগরীর জরুন এলাকায় আলীফ গ্রুপের।
Advertisement
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, মহানগরের কোনাবাড়ীর জরুন এলাকায় অবস্থিত আলিফ গ্রুপের স্বাধীন গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিকরা বেশ কিছুদিন ধরেই ঈদ বোনাস, ছুটির টাকা ও চলতি মাসের অর্ধেক বেতনের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
এ অবস্থায় বুধবার সকাল থেকে আট শতাধিক শ্রমিক কর্মবিরতি শুরু করেন। শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে বৃহস্পতিবার সকালে কর্তৃপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে একটি নোটিশ দিয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, কয়েকদিন ধরেই বাৎসরিক ছুটির টাকা, ঈদ বোনাস ও চলতি মাসের অর্ধেক বেতনের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো সমাধান না দিয়ে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। সামনে ঈদ, অন্য কারখানার শ্রমিকরা যখন কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত তখন আমরা আমাদের টাকার জন্য সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।
কর্তৃপক্ষের কেউ না থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম জানান, শ্রমিকরা কিছুদিন ধরেই তাদের পাওনাদির জন্য দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো সমাধান না করে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। এতে শ্রমিকরা আরও ক্ষুব্ধ হয়। তারা কারখানার মূল ফটক ও ভেতরে অবস্থান করছেন।
আমিনুল ইসলাম/এফএ/এএসএম