ধর্ম

রোজা রেখে সফরে বের হলে রোজা ভেঙে ফেলা যাবে কি?

কোনো ব্যক্তি ৪৮ মাইল (৭৭.২৩২ কিলোমিটার) রাস্তা অতিক্রম করে কোনো জায়গায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজের শহর থেকে বের হলে ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় তাকে মুসাফির বলা হয়। মুসাফির গণ্য হওয়ার জন্য সফর পরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করা জরুরি নয়। সফরের নিয়তে নিজের শহর থেকে বের হয়ে এক মাইল অতিক্রম করলেও সে মুসাফির গণ্য হবে।

Advertisement

ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী মুসাফির ইসলামি বিধিবিধান পালনের ক্ষেত্রে কিছু ছাড় পান। যেমন প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজগুলো অর্থাৎ জোহর, আসর ও ইশার নামাজ মুসাফিরদের কসর বা সংক্ষীপ্ত করে পড়তে হয়। একইভাবে মুসাফিরের জন্য রমজানের ফরজ রোজা ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। মুসাফির ব্যক্তি যদি চান তিনি রমজানের রোজা না রেখে পরবর্তীতে ওই রোজা কাজা করতে পারেন।

মুসাফিরের জন্য এই ছাড়ের কথা ঘোষণা করে কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। রোজা নির্দিষ্ট কয়েক দিন। তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ হবে, কিংবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। (সুরা বাকারা: ১৮৪)

কিন্তু কেউ যদি সফরে থাকার পরও রোজা রাখেন অথবা রোজা রেখে সফর শুরু করেন, তাহলে তার জন্য সফর অবস্থায়ও গ্রহণযোগ্য ওজর ছাড়া ওই রোজা ভেঙে ফেলা নাজায়েজ। কোনো ওজর না থাকলে রোজা শুরু করার পর তা পূর্ণ করা জরুরি। যদি কোনো ওজর দেখা দেয় যেমন অত্যধিক ক্ষুধাতৃষ্ণা বা অসুস্থতা, তাহলে রোজা ভাঙার অনুমতি রয়েছে।

Advertisement

অনেকে বলে থাকেন, ‘সফর অবস্থায় রোজা ভাঙ্গা জায়েজ’। এভাবে বলা ঠিক নয়। কারণ এতে ধারণা হয় যে, সফর অবস্থায় রোজা শুরু করার পরও তা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ বা রোজা শুরু করার পর সফরে রওয়ানা হলে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ। অথচ এটা ঠিক নয়। নিয়ত করে রোজা শুরু করার পর তা ভাঙা জায়েজ নয়।

অবশ্য সফর অবস্থায় রোজা শুরু করার পর ভেঙে ফেললেও ওই রোজার শুধু কাজা করতে হবে, কাফফারা দিতে হবে না।

ওএফএফ/এএসএম

Advertisement