দেশজুড়ে

বিএনপির পর বরগুনার সেই হিন্দু পরিবারের দায়িত্ব নিলো জামায়াত

বরগুনায় আলোচিত মন্টু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

Advertisement

সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা শহরের কালীবাড়ি এলাকায় ভুক্তভোগীর বাড়িতে যান তিনি। ডা. শফিকুর রহমান নিহত মন্টু চন্দ্র দাসের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন।

তিনি ভুক্তভোগী ওই হিন্দু পরিবারের শিশুদের লেখাপড়া এবং চিকিৎসার খরচসহ পরিবারের ব্যয়ভার জামায়াতে ইসলামী বহন করবে বলে ঘোষণা দেন।

এছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় বিএনপিকে ধন্যবাদ জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, বিএনপির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই মামলার অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করবে জামায়াতে ইসলামী।

Advertisement

পরে বরগুনার টাউন হল মাঠে এক পথসভায় জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা খুবই ভারাক্রান্ত মনে আজ আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা জানেন, এই সদর উপজেলায় গত বুধবার একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল। একটা অবুঝ শিশুকে নির্যাতন করা হয়েছিল। বাবা এই নির্যাতনের প্রতীকার চেয়ে মামলা করেছিলেন। এটা ছিল তার নাগরিক অধিকার। কিন্তু নির্যাতনকারী জালেমরা মামলা করার অপরাধে বাবাকে হত্যা করেছে। আমরা এসেছি তাদের দুঃখকে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

জামায়াত আমির আরও বলেন, যে ভদ্রলোক খুন হয়েছেন তিনি অতি সাধারণ মানুষ। একটা মুরগির দোকানের কর্মচারী। তার বৃদ্ধ মা আছেন, স্ত্রী আছেন, আড়াই মাসের একটি কন্যাসন্তানসহ তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে। কোনো ছেলেসন্তান নেই। তাকে খুন করার মাধ্যমে এই পরিবারকে পুরুষশূন্য ও অভিভাবকশূন্য করে ফেলা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা দাবি করি যাতে ৯০ দিনের মধ্যে এই মামলার রায় বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ধন্যবাদ জানাই খুব অল্প সময়ে বিএনপি পরিবারটির খবর নিয়েছে। তাদের নেতা তিনি এটাও বলেছেন যে, এই পরিবারের মামলা চালানোর যাবতীয় দায়িত্ব তিনি গ্রহণ করেছেন। আমরা তাদের এই উদ্যোগের জন্য অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই। আমরাও বলি, এই মামলা পরিচালনার জন্য তাদের পাশে থেকে লড়াই করবো।

তিনি আরও বলেন, পরিবারটি এ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোটখাটো সহযোগিতা পেয়েছে। কিন্তু খুব অনিশ্চয়তা পেয়ে বসেছে তাদের। আমি যখন কথা বলছিলাম তখন তাদের চোখ পায়রা নদীতে পরিণত হয়েছে। অনবরত চোখের পানি ঝরছিল। কোন ভাষায় আমি তাদের সান্ত্বনা দেবো। তারা বলেছে কে আমাদের দেখবে, আমরা বলেছি আমরাও আল্লাহর সৃষ্টি আপনারাও তার সৃষ্টি। আল্লাহ আপনাদের দেখবেন।

Advertisement

পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে তিনি বলেন, আমি শিশুটিকে কোলে নিয়ে বলেছি, এই বাচ্চাদের বেড়ে ওঠা, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং পরিবারের ন্যূনতম ব্যয় নির্বাহের পূর্ণ দায়িত্ব মহান আল্লাহ তায়ালার তরফ থেকে জামায়াতে ইসলামী গ্রহণ করলো।

নুরুল আহাদ অনিক/জেডএইচ/এমএস