রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর সুদঝা পুনর্দখল করেছে বলে দাবি করেছে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী। গত বছর গেরিলা হামলা চালিয়ে এই শহর দখল করেছিল ইউক্রেন। বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, উত্তর সামরিক গ্রুপের আক্রমণাত্মক অভিযানের সময় মেলোভয়, পোডোল ও সুদঝা শহর মুক্ত করা হয়েছে।
Advertisement
মার্কিন সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ) বলেছে, মাঠপর্যায়ের ভিডিও ফুটেজ থেকে বোঝা যায় যে রাশিয়ান বাহিনী সুদঝা দখল করেছে এবং শহরের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত জাওলেশেনকা পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। সুদঝা পুনর্দখল রাশিয়ার জন্য একটি বড় প্রতীকী বিজয়। যদিও সুদঝা একটি ছোট শহর, যেখানে ইউক্রেনের আক্রমণের আগে প্রায় ৫ হাজার লোক বাস করত, এটি ইউক্রেনের দখলে থাকা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে একটি ছিল।
এই ঘটনা এমন সময়ে ঘটেছে, যখন মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বৃহস্পতিবার মস্কো পৌঁছেছেন বলে সিএনএনের একটি সূত্র জানিয়েছে। উইটকফ রাশিয়ান কর্মকর্তাদের সামনে পুরো ফ্রন্টলাইনে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাবটি উপস্থাপন করবেন, যা ইউক্রেন এরই মধ্যে মেনে নিয়েছে।
এদিকে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় বলেছেন, ইউক্রেনের দখলে থাকা কুর্স্ক অঞ্চলের সমস্ত অংশ শিগগির মুক্ত হবে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন যে এটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করা প্রয়োজন। আমাদের সেনা ও বেসামরিক নাগরিকদের সর্বাধিক সংখ্যক জীবন বাঁচানোর জন্য যতটা সময় প্রয়োজন, ততটা সময় নেওয়া হবে। তবে এতে কোনো সন্দেহ নেই যে কুরস্ক অঞ্চল শীঘ্রই মুক্ত হবে।
Advertisement
পুতিন বুধবার কুর্স্ক অঞ্চলে একটি অভিযান চালিয়েছিলেন। রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভিডিওতে সামরিক ইউনিফর্ম পরিহিত রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ফ্রন্টলাইনের সেনাদের বলেছেন, মস্কোর লক্ষ্য হলো কুর্স্ক অঞ্চলকে সম্পূর্ণ মুক্ত করা।
ইউক্রেন গত আগস্টে কুরস্ক অঞ্চলে হঠাৎ আক্রমণ চালিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো রাশিয়ার ভূখণ্ড দখল করে। এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলের বিনিময়ে ভূমি দখল করা ও পূর্ব ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইন থেকে মস্কোর সম্পদ সরিয়ে নেওয়া। তবে ইউক্রেন দখলকৃত অঞ্চল ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে।
ইউক্রেনের শীর্ষ জেনারেল ওলেকসান্ডার সিরস্কি জানান, রাশিয়ার বিমান হামলায় সুদঝা শহর প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। অবস্থা এখন আরও সুবিধাজনক হওয়ায় এখন কুরস্ক থেকে রাশিয়ার অতিরিক্ত সৈন্যদের ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার অগ্রাধিকার হলো ইউক্রেনীয় সৈন্যদের জীবন বাঁচানো।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়ানরা স্পষ্টতই আমাদের সৈন্যদের উপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করছে। সামরিক কমান্ড যা করতে হবে তা করছে, যতটা সম্ভব জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
Advertisement
রাশিয়ার শীর্ষ জেনারেল ভ্যালেরি গেরাসিমভ দাবি করেছেন, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের দখলকৃত ৮৬ শতাংশের বেশি এলাকা পুনর্দখল করেছে, ৪৩০ ইউক্রেনীয় সৈন্যকে বন্দী করা হয়েছে ও অবশিষ্ট ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ঘেরাও হয়ে পড়েছেন।
সূত্র: সিএনএন
এসএএইচ