দেশজুড়ে

বিলুপ্তির পথে ‘রেশমি মিষ্টি’

‘রেশমি মিষ্টি’। তবে এটি দেখতে মোটেও প্রচলিত মিষ্টির মতো নয়। কিন্তু ৮০-৯০ দশক থেকেই এ নামেই পরিচিত।

Advertisement

চিনি ও ফুড কালার দিয়ে তৈরি হয় এটি। তবে এখন আর সচরাচর চোখে পড়ে না। একেবারে বিলুপ্তির পথে। এরমধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন এই পেশা ধরে রেখেছেন।

তাদের মধ্যে একজন ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার জালিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব শেখ (৭৯)। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এ পেশায় জড়িত তিনি। বাইসাইকেল চড়ে শহর-গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন ঐতিহ্যবাহী ‘রেশমি মিষ্টি’।

চিনি জ্বাল দিয়ে ঘন করে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা হয় এটি। যা বিভিন্ন বস্তুর আকৃতি দেওয়া হয়। যেমন ফুল, পাখি, হুক্কা, সাইকেল, বাঁশি, পাখি। আগে আট আনা, এক টাকা দুই টাকা দাম হলেও এখন দাম ১০-২০ টাকা। যা শিশুদের কাছে বেশ প্রিয়।

Advertisement

বোয়ালমারী জর্জ একাডেমির ছাত্রী প্রিয়তা খান জাগো নিউজকে বলে, জীবনের প্রথম দেখলাম ও নাম শুনলাম। দুটা ফুল ও একটা সাইকেল কিনেছি। দেখতে ও খেতে ভালো লেগেছে।

নাসিতা খান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, যখন স্কুলে পড়তাম তখন কিনে খেতাম। এখন আর দেখা যায় না। বহু বছর পড়ে দেখলাম। তাই ছেলেমেয়ের জন্য কিনে নিলাম। শৈশবে ফিরে গেলাম। এর স্বাদ বিভিন্ন রকমের।

বোয়ালমারী পৌরসভার বাসিন্দা শাহিনুজ্জামান খান ডেভিড বলেন, অনেক বছর পর রেশমি মিষ্টি দেখতে পেলাম। আমরা যখন প্রাইমারি স্কুলে পড়তাম তখন স্কুলের সামনে পাওয়া যেত। দুই টাকা, এক টাকা দিয়ে কিনে খেতাম। এটা একটা পুরনো দিনের ঐতিহ্য। এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

কথা হয় ‘রেশমি মিষ্টি’ বিক্রি করা আইয়ুব শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি জিয়াউর রহমানের আমল থেকে এটা তৈরি করি। প্রতিদিন এক কেজি চিনি ও ফুড কালার দিয়ে এ রেশমি মিষ্টি তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি। দাম ১০ টাকা, ২০ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ৮-৯শ টাকার বিক্রি হয়। খরচ বাদে ৪-৫শ টাকা আয় হয়। এ দিয়েই চলে আমার সংসার।

Advertisement

এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/জেআইএম