ফজরের আজানের পর নিয়ত করলে কি রোজা হবে?

রোজার জন্য নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত বলা হয় মূলত অন্তরের ইচ্ছাকে। নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়। অন্তরে কেউ যদি ইচ্ছা করে যে ‘আগামীকাল আমি রোজা রাখবো’ এটাই নিয়ত গণ্য হবে। তবে নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা উত্তম। যারা আরবি জানে না তারা বাংলায়ই মুখে উচ্চারণ করে রোজার নিয়ত করতে পারেন। অন্তরে রোজার ইচ্ছার সাথে সাথে মুখে এভাবে বলবেন, ‘আমি আগামীকাল রোজা রাখার নিয়ত করলাম’।

রোজার নিয়তের সময় শুরু হয় রোজার আগের দিনের সূর্যাস্তের পর থেকে। যেমন-মঙ্গলবারের রোজার নিয়ত সোমবার দিবাগত রাত তথা সূর্যাস্তের পর থেকে করা যায়। সোমবার সূর্যাস্তের আগে মঙ্গলবারের রোজার নিয়ত করা যথেষ্ট নয়।

রমজানের ফরজ রোজার নিয়ত আগের দিন সূর্যাস্তের পর থেকে সুবহে সাদিকের আগে অর্থাৎ রাতের মধ্যে করা উত্তম। উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের আগে রোজা রাখার নিয়ত করবে না তার রোজা (পূর্ণাঙ্গ) হবে না। (সুনানে আবু দাউদ: ১/৩৩৩)

তবে যদি কেউ রাতে রোজার নিয়ত না করতে পারে, তাহলে ফজরের দিনে সূর্য ঢলার প্রায় এক ঘণ্টা আগে নিয়ত করলেও রোজা হয়ে যাবে। অর্থাৎ ফজরের আজানের সময় বা আজানের পর নিয়ত করলেও রোজা হয়ে যাবে। শর্ত হলো, সুবহে সাদিকের পর থেকে নিয়তের পূর্ব পর্যন্ত রোজার পরিপন্থী কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সুবহে সাদিকের পর রোজার পরিপন্থী কোনো কাজ করলে অর্থাৎ কিছু খেলে, পান করলে বা রোজা ভেঙে যায় এমন কিছু করলে আর রোজার নিয়ত করার সুযোগ থাকবে না।

সালামা ইবনুল আকওয়া (রা.) বলেন, (আশুরার রোজা যখন ফরজ ছিল তখন) আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আসলাম গোত্রের একজন ব্যক্তিকে ঘোষণা করতে বললেন, যে সকাল থেকে কিছু খায়নি সে বাকি দিন রোজা রাখবে। (সহিহ বুখারি: ২০০৭)

আবদুল করিম জাযারি (রহ). বলেন, এক রমজানে কিছু লোক সকালে চাঁদ দেখার সাক্ষ্য দিল। তখন ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) বললেন, যে ব্যক্তি (ইতিমধ্যে কিছু) খেয়েছে সে বাকি দিন খাওয়া থেকে বিরত থাকবে। আর যে খায়নি সে বাকি দিন রোজা রাখবে। (বাদায়েউস সানায়ে ২/২২৯)

ওএফএফ/জেআইএম