জাতীয়

জনগণ উচ্ছৃঙ্খল হয়ে গেলে সমস্যা, বাহিনী দিয়ে কন্ট্রোল করা যায় না

সম্প্রতি গুলশানের এক বাসায় মব করে তল্লাশির নামে তছনছ, ভাঙচুর এবং লুটপাট চালানো হয়। একইদিন দুপুরে মব করে রাজধানীর ভাটারা এলাকায় ইরানের দুই নাগরিকসহ তিনজনকে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে এ দুই বিদেশি নাগরিককে উদ্ধার করে এবং হাসপাতালে ভর্তি করে। এর আগেরদিন সোমবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মসজিদের মাইকে ডাকাত এসেছে ঘোষণার পর পিটুনিতে দুজন নিহত হন।

Advertisement

এসব ঘটনা উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, যারা মব জাস্টিস করছে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। জনগণ এমন উচ্ছৃঙ্খল হয়ে গেলে অনেক সময় কিন্তু সমস্যা হয়। বাহিনী দিয়ে তো সব সময় কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করা যায় না।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

গত ছয় মাসে মব জাস্টিস কমছে না। বাসা-বাড়িতে ঢুকে মব জাস্টিসসহ বিদেশিদের ওপর মব জাস্টিসের মতো হামলার ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি দ্বিমত করবো না, হচ্ছে। তবে যেখানে হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। পুলিশের ওপরেও হামলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে জনগণকে সচেতন করতে হবে। জনগণ এমন উচ্ছৃঙ্খল হয়ে গেলে অনেক সময় কিন্তু সমস্যা হয়। বাহিনী দিয়ে তো সব সময় কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করা যায় না।

Advertisement

তিনি বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের কন্ট্রোল করার জন্য মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন যেমন বড় ভূমিকা পালন করেন। এক্ষেত্রে আপনাদেরও (সাংবাদিক) একটা বড় ভূমিকা পালন করতে হবে, যাতে করে মব জাস্টিসের মতো ঘটনা না ঘটে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় তৎপর আছে এবং যে জায়গায় (মব) হচ্ছে তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা (মব জাস্টিস) না ঘটে সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

আরও পড়ুনরাতের বাসে ডাকাত আতঙ্ক, কমছে যাত্রী‘৩০০ কোটি টাকা আছে’ সাবেক তত্ত্বাবধায়কের উসকানিতেই লুটপাট

বাসা-বাড়িতে হুট করে অভিযানের নামে লুটপাটের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কোনো অভিযান চালানোর কারও এখতিয়ার নেই।

মহাসড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি হচ্ছে, সামনে ঈদ। কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হবে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যতে যেন না হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Advertisement

মহাসড়কে ডাকাতির রেড জোন চিহ্নিত করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে রাজশাহী জোনেই ডাকাতির সংখ্যাটা একটু বেশি, টাঙ্গাইলেও একটুখানি বেশি। ডাকাতি যেন না হয় সেজন্য ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছি। তারা আগের চেয়ে অনেক তৎপর হচ্ছে।

ঈদে চাঁদাবাজির বিষয়ে এক প্রশ্নে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ঈদে চাঁদাবাজি যেন না হয় এবং ছিনতাই যেন না হয়- এজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের জনবলের অনেক ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের নিজেদের কোনো থানার জায়গা নেই, ভাড়া ভবনে থাকছে তারা। পাশাপাশি যানবাহনেরও অনেক সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যেই ট্যুরিস্ট পুলিশ ভালো কাজ করে যাচ্ছে।

আমাদের দেশে ট্যুরিস্ট পুলিশ সক্রিয় হলে বিদেশি ট্যুরিস্ট আমাদের দেশে আসবে। অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখবে বলেও উল্লেখ করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

টিটি/কেএসআর/জেআইএম